নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের শার্শার স্বরুপদহ গ্রামের নবজাতক হত্যা মামলায় দুইজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র এসআই মিজানুর রহমান।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো শার্শার স্বরুপদহ গ্রামের মৃত মনু মিয়ার স্ত্রী ও মৃত আব্দুল হাকিমের মেয়ে মাছুরা ও মৃত আব্দল হাকিমের স্ত্রী কদবানু।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে র্শাশার পান্তাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন তোতার পরিত্যক্ত পুকুর থেকে নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করে। নবজাতকের বয়স অনুমান দুইদিন হবে। এব্যাপারে এসআই এটিএম তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে শার্শা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, আসামি কদবানু শার্শার জেলেপাড়া গ্রামের ইসমাইলের বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে বসবাস করেন এবং ভিক্ষা করে জীবীকা নির্বাহ করেন। তার মেয়ে মাছুরা স্বামী মনু মিয়ার মৃত্যুর পর সে আর বিয়ে না করে সড়ক নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। প্রায় দুই বছর আগে মাছুরা সিলেটে সড়ক নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যায়। সেখানে অপর এক অপরিচিত শ্রমিকের সাথে তার শারিরীক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে মুছুরা অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। এরপর সে যশোরের শার্শায় তার মায়ের কাছে ফিরে আসে। এসময় জেলাপাড়া গ্রামের লোকজন স্বামী না থাকার পরও মাছুরার অন্তঃসত্তা হওয়া নিয়ে কানাঘোষা শুরু হয়। মাছুর তখন তার মাকে নিয়ে পাশের গ্রাম পান্তাপাড়ায় ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এ বাড়িতে মাছুরা সন্তান প্রসব করলে নবজাতকে বাথরুমের বালিতির মধ্যে রেখে আসেন। নবজাতক কান্না শুরু করলে কদবানু মুখ চেপে কান্না থামিয়ে বালতিতে করে নিয়ে মাঠের মধ্যে পরিত্যাক্ত পুকুরের আর্জনার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিল।
এ মামলার তদন্তকালে পিবিআই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে নবজাতক হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে মাছুর ও তার মা কদবানুকে আটক করে। আটক দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা নবজাতককে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। আসামিদের দেয়া জবানবন্দি ও সাক্ষীদের দেয়া বক্তব্যের যাচাই বাছাই করে নবজাতককে হত্যা কারায় মা-মেয়েকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে নবজাতকের মা ও নানীকে আটক দেখানো হয়।