নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশসেরা কনস্ট্রাকশন ব্যবসায়ী যশোরের হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনালের কর্নধার হাসান আলী আর নেই। রোববার (১০ আগস্ট) সকাল ৬টায় ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে হাসান আলীর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি ৬ পুত্র, ২ কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে গতকাল শহরের স্যানেটারি ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখেন।
এ দিন আসর বাদ শহরের ঈদগাহ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে জানাজায় পিতার রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া প্রার্থনা করেন তার সন্তানরা। জানাজায় জেলা প্রশাসক মো, আজাহারুল ইসলামসহ যশোর শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। জানাজার নামাজ পড়ান তার দৌহিত্র রাফি হাসান।
হাসান আলী বিভিন্ন সমাজিক কাজে যুক্ত ছিলেন। সমাজসেবক হিসেবেও তিনি অধিক পরিচিত। তার মৃত্যুর সংবাদে যশোর শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার বাড়িতে স্বজন ও গুণগ্রাহীসহ সমাজের বিশিষ্টজনেরা ভিড় করেন। তাকে শেষবারের মতো দেখতে পোস্ট অফিসপাড়ার বাড়িতে যান যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক-প্রকাশক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা এবং সাধারণ সম্পাদক দৈনিক গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপি নেতা গোলাম রেজা দুলুসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ দিকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাসদের যশোর জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক অশোক রায়, যশোর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুস্তাক হোসেন শিম্বা, যশোর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাজী আনিছুর রহমান মুকুল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, হাসান আলী নদী ভাঙন এলাকা দৌলতখান-ভোলা থেকে যশোরে এসেছিলেন ১৯৫৫ সালে। সেই থেকে যশোর শহরে স্থায়ী বসবাস। একজন সাধারণ কর্মজীবী থেকে আজকের অবস্থানে আসতে কঠোর পরিশ্রম করেছেন হাসান। অধ্যবসায় ও সততা ছিল তাঁর ব্যবসার অন্যতম পুঁজি। দীর্ঘ পাঁচ যুগের বেশি সময়ে তিনি ব্যবসা ও সমাজসেবায় নিয়োজিত থেকে যশোরে হাসান আলী সাহেব হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন।
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি বড় অংশের কাজ চলছে তার। মূলত দেশের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হলেও ট্রেড বিজনেসে তিনি সিদ্ধহস্ত। যশোর শহরের সেলিম ব্রাদার্স ১৯৬৫ সাথে প্রতিষ্ঠার পর অন্তত এমন আরো সাতটি ব্যবসা তিনি পরিচালনা করেছেন। যশোরের অন্যতম বৃহৎ আবাসিক হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী তিনি। সবখানেই দারুন সফল। নব্বই ছুঁইছুঁই বয়সেও তিনি নিয়মিত অফিস করতেন। তারা সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যুর দুয়ার থেকে নিজে ফিরলেও সে সময় প্রিয় সহধর্মিণীকে হারিয়েছিলেন।