নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন বোর্ডের আহ্বায়ক ও সিনিয়র সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট কেএম আবু নওশাদ বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় জেলা প্রশাসকের মিডিয়া সেলে স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আগামীকাল ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
নির্বাচন বোর্ডের আহ্বায়ক ও সিনিয়র সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট কেএম আবু নওশাদ বলেন, নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের আগে আমরা দুই প্যানেলের প্রার্থীদের সাথে বৈঠক করি। বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান, চেম্বারের প্রশাসক মো: রফিকুল হাসানসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা আলোচনা করে আদালতের আদেশ মেনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিতাদেশের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি।
সূত্র মতে, মেসার্স পারভেজ ট্রেডার্সের মালিক মেহেদী হাসান (ভোটার নম্বর-৬৪২) বুধবার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। বিচারক সুজাতা আমিন স্থগিত আদেশ ও বিবাদীদের এক কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার বিকাল চারটায় আদালতের ওই আদেশের কপি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে অর্থাৎ জেলা প্রশাসনের নির্বাচন বোর্ডের কার্যালয়ে এসে পৌছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রার্থীদের সাথে বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে মামলার বাদী মেহেদী হাসান মামলায় অভিযোগ তিনজনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, ইতিমধ্যে প্রকাশিত ভোটার তালিকায় তিনশ’র অধিক ভোটারের হালনাগাদ কোনো আয়কর সনদ নেই বলে। তারা আয়কর সনদের মূল কপি দাখিল না করে বেআইনিভাবে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। যা বেআইনি। এসব অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলা করেন।
ভোট স্থগিত প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে তারা বলেছেন, মামলার কারণে আগামীকালেল চেম্বারের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আমরা চাই মামলাটি নিষ্পত্তি করে দ্রুত সময়ের মধ্যে যশোর চেম্বারের ভোট গ্রহন করতে হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেলটি প্রধান হুমায়ুন কবীর কবু, মিজানুর রহমান, আসাদুজ্জামান মিঠু প্রমুখ।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর প্যানেল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের লিডার মিজানুর রহমান খান, নিশ্চিত পরাজয় জেনে একটি মহল যশোর চেম্বারের ভোট পরিকল্পিভাবে স্থগিত করেছে। এই ষড়যন্ত্রের সাথে কারা জড়িত তা ব্যবসায়ী মহল জানে। আমাদের প্যানেল আজ শুক্রবার প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ আট বছর পর আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ ভোট যুদ্ধে মাঠে নামে। প্রার্থীরা গত এক মাস ধরে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন। কিন্তু দুই দিন আগে নির্বাচন স্থগিত করা হলো।
২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল চেম্বারটির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জেলা বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল বিজয়ী হন। ২০১২ সালের ৩ মার্চ মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি দায়িত্ব বুঝে পান। ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ওই বছরের ১২ জুলাই ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন ভেস্তে যায়। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পালন করছে প্রশাসক।
