নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ইজিবাইক চোর সিন্ডিকেটের সদস্যকে আটক করে পুলিশে দেয়ার পরে অজ্ঞাত কারণে আবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ জুলাই বিকেলে সদর উপজেলার মুনসেফপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। ফলে ওই চোর সিন্ডিকেটকে রক্ষা করতে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ জুন দুপুরে জুয়েল আহম্মেদ নামে এক চালকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ইজিবাইক চুরি করে নিয়ে নেয় একটি সিন্ডিকেট।
সদর উপজেলার মুনসেফপুরে চুরি হওয়া ইজিবাইকের মালিক আমিনুর রহমান জানিয়েছেন, একই এলাকার আবাদ কচুয়া গ্রামের জুয়েল আহম্মেদ তার একটি ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিদিনের মত গত ২৪ জুন দুপুর ২টার দিকে ইজিবাইক নিয়ে চালক জুয়েল যশোর শহরের মণিহারের সামনে অবস্থান করছিলেন। এরই মধ্যে যাত্রীবেসে ছয়জন লোক চালক জুয়েলের কাছে আসে। এসময় তারা মুনসেফপুর মোড়ে যাবে বলে জানায়। তাদের নিয়ে রওনা হলে চাউলিয়া গেটে এসে পাঁচজন নেমে যায়। একজনকে নিয়ে মুনসেফপুর মোড়ের পাশে চাতালের মোড়ে এসে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে আবারও সেখান থেকে রূপদিয়ার দিতে রওনা করেন চালক। চলন্ত অবস্থায় ইজিবাইকের পিছনে থাকা যাত্রীবেশে লোকটি চালকের মাথায় আঘাত করছে বলে অনুভব করেন। এরপর থেকে আর কিছুই বুঝতে পারেননি চালক। এরইমধ্যে চেতনা নাশকদ্রব্য তার নাকে দিয়ে অজ্ঞান করে অত্যন্ত কৌশলে তাকে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে ইজিবাইকটি চুরি করে নিয়ে চলে যায়। তবে তারা যাওয়ার সময় কাছে থাকা তিন হাজার দুইশ’ টাকা ও একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনসেট নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিছুটা সুস্থ হয়ে বুঝতে পারেন যে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তাকে চেতনা নাশক দিয়ে ইজিবাইক, টাকা ও মোবাইল ফোনসেট চুরি করে নিয়ে গেছে।
এদিকে এই ঘটনায় ওইদিন সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন চালক জুয়েল আহম্মেদ। যেখান থেকে ইজিবাইকটি নিয়েছিল সেই এলাকার একটি সিসি ক্যামেরায় ইমন নামে এক চোরকে সনাক্ত করে চালক জুয়েল। গত ২৫ জুলাই বিকেলে ইমনের সহযোগি মুকুল নামে একজনকে আটকের পর পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কবির হোসেন হেফাজতে নেন। পরে সেখানে চোর ইমনের আত্মীয় কচুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার তরিকুল ইসলাম দেনদরবার করে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
ইজিবাইক চালক জুয়েল আহম্মেদ জানিয়েছেন, গত শুক্রবার বিকেলে মুনসেফপুরে দেখে ইমন ও মুকুলকে সনাক্ত করা হয়। এরই মধ্যে ইমন সেখান থেকে সটকে পড়ে। মুকুলকে আটকের পর পুলিশে দেয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে স্থানীয়দের ধারণা এই ইজিবাইক চোর সিন্ডিকেটের সাথে মেম্বার তরিকুলের প্রকাশ্যে ও গোপনে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
তিনি আরো জানিয়েছেন, ইমন ও মুকুল সিন্ডিকেট এলাকা থেকে ইজিবাইক চুরি করে খুলনার ৭ নম্বর ঘাট এলাকায় বিক্রি করে। গত এক মাসেও তার ইজিবাইকের কোন সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ।
এবিষয়ে নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কবির হোসেন জানিয়েছেন, মুকুল নামে একজনকে স্থানীয়রা পুলিশের কাছে সোপর্দ করলেও এই ইজিবাইক চুরির সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাছাড়া জুয়েলের অভিযোগের তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ।