নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রায় দেড় শ বছরের ঐতিহ্য কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গাজীকালু-চম্পাবতী মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছে। এসময় দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। মেলার অনুমতি না থাকলেও মেলা কমিটি দোকানপাট বসাতে শুরু করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এবং সংঘর্ষের দিবক গড়ায়।
আহতদের মধ্যে ছয়জনকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন, উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মহেন্দ্রপুর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, কুদ্দুস প্রামাণিক (৭০), তুহিন হোসেন, জিহাদ হোসেন, জামাত আলী ও ইউনুস আলী। তারা জামায়াতের সমর্থক বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন- খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান, শিক্ষক টিপু সুলতান, সুকুর শেখ, শরীফ এবং আসাকুর রহমান। তারা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে কুমারখালীর হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ‘গাজীকালু-চম্পাবতী’ মেলার আয়োজন করা হয়। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত কর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকেরা মেলা কমিটির পক্ষ নেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুপক্ষের প্রায় ১১ জন আহত হয়েছেন।
জামায়াত নেতাদের দাবি, মেলায় অশ্লীলতা ও জুয়া চলায় তারা প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিএনপির সমর্থকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। অপরদিকে, বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, জামায়াতের শতাধিক কর্মী টুপিপরা অবস্থায় দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে।
এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান বলেন, জামায়াতের শত শত লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করব।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছে। থানায় মামলা করা হবে।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।