পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: তালা উপজেলার খলিষখালী ইউনিয়নের দলুয়া বাজারের সন্নিকটে শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ ও দলুয়া টু কাদাকাটি সড়কের ধারে গড়ে উঠেছে অবৈধ শুটকি মাছের চাতাল। কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনে একটি বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রধান সড়কের ধারে এই অবৈধ শুটকি চাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। চাতালের মাছ পচা দুর্গন্ধে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। কলেজের সামনের এই সড়ক দিয়ে নাক চেপে ধরে চলাচল করতে হচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে অনেক পথচারী বমি করে ফেলছেন।
শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের মাত্র কয়েক গজ দূরে এবং দলুয়া টু কাদাকাটি সড়কের ধারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিশাল মাছ শুটকির চাতালে বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকানোর কাজ চলছে। পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকরা চাতালে মাছ শুকানোর কাজ করছে। সম্পূর্ণ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাছ শুটকি করা হচ্ছে এই চাতালে। শুটকি মাছের সাথে গড়াগড়ি খাচ্ছে কুকুরের বাচ্চা। শ্রমিকরা পায়ে ময়লা জুতা অবস্থায় শুটকি উপর দিয়ে হাঁটা চলা ও শুটকি নাড়াচাড়ার কাজ করছে। পুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছের পেটের নাড়িভুড়ি ও ময়লা পরিস্কার না করেই শুটকি করা হচ্ছে।
অপরিকল্পিতভাবে শুটকির চাতাল করে যেমন পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে ঠিক তেমনি মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর নোংরা মাছ শুটকি। নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি শুটকি খেয়ে ও শুটকি চাতালের বিষাক্ত দুর্গন্ধে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অবৈধ এই শুটকি চাতালের মালিকের পরিচয় জানতে চাইলে শ্রমিকরা বলেন পাটকেলঘাটার মনিরুল নামের এক ব্যক্তির কথা বলেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে শুটকি চাতালের মালিক মনিরুল বলেন বিভিন্ন এলাকায় আরও শুটকির চাতাল আছে আপনারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এ সময় মনিরুল অবৈধ শুটকি চাতালের মালিকানার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি মালিক নই আমি দেখাশোনা করি মাত্র এর মূল মালিক দলুয়া এলাকার মাস্টার নামের একজন। শুটকি চাতাল পরিচালনার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বারবার প্রশ্ন করার পরে তিনি বলেন আমি কিছু জানি না সবই মাস্টার জানে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চাতাল মনিরুলের কাছে মাস্টারের ফোন নাম্বার চাইলে মনিরুল কয়েকদিন ধরে তাল বাহানা করতে থাকে।
জানতে চাইলে খলিশখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক সাব্বির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে যখন জানলাম অবশ্যই আমি দেখব।
তালা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধা খা বাবলি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কে সাথে নিয়ে আমরা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে এই প্রতিবেদককে জানান।