“আপনাদের নিজেদের মধ্যে রেশারেশি, বিবাদ, বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া ঠিক হবে না যাতে করে প্রতিপক্ষ আপনাদের মধ্যেকার বিরোধের সুযোগ নিতে পারে।”
ঢাকা অফিস
‘চারপাশে সুপ্ত আকাঙ্ক্ষায় গুপ্ত স্বৈরাচার ওৎ পেতে আছে’ মন্তব্য করে দলের চূড়ান্ত হওয়া একক প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার রাতে দলীয় এক অনুষ্ঠানে শিগগির দলীয় একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘শিগগিরই পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন আসনে বিএনপির মনোনীত দলীয় প্রার্থীদের নাম আমরা জানিয়ে দেব দলের পক্ষ থেকে। দল যাকে যে আসনে মনোনয়ন দেবে বা দেয় অনুগ্রহপূর্বক তাকে বিজয়ী করে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যেকে; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ দয়া করে কাজ করবেন।
‘‘মনে রাখবেন আপনাদের চারপাশে সুপ্ত আকাংখা নিয়ে গুপ্ত স্বৈরাচার কিন্তু ওৎ পেতে রয়েছে। সুতরাং আপনাদের নিজেদের মধ্যে রেশারেশি, বিবাদ, বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া ঠিক হবে না যাতে করে প্রতিপক্ষ আপনাদের মধ্যেকার বিরোধের সুযোগ নিতে পারে।”
রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে প্রবাসে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্যপদ গ্রহণের কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলের ওয়েবসাইটে অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ের কার্য্ক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘প্রতি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী, আপনারা যারা নিজ নিজ এলাকায় জনগণের সমর্থন পেতে গণসংযোগ করছেন…আপনারা সবাই কিন্তু শেষ পর্যন্ত শহীদ জিয়ার অনুসারী, খালেদা জিয়ার সৈনিক, বিএনপির কর্মী, ধানের শীষের সমর্থক। মনে রাখবেন, ধানের শীষ জিতলে আপনি জিতেছেন বা জিতছেন বা জিতবেন। বিজয়ী হবে দেশ এবং গণতন্ত্র।
‘‘নেতাকর্মীদের প্রতি আমার আহ্বান স্বাধীনতার ঘোষকের প্রতি অমর্যাদা হয়, দেশ এবং জনগণের জন্য মাদার অব ডেমোক্রেসির অবদান প্রশ্নবিদ্ধ হয় আপনারা এমন কোনো আচরণ দয়া করে করবেন না। সারাদেশে বিএনপির লাখো- কোটি সমর্থক বিব্রত হয় আপনারা কেউ এমন কোনো আচরণ দয়া করে করবেন না।”
জনগণের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের সামনে আমি সেই স্লোগান উচ্চারণ করতে চাই- ‘ভোট দিলে ধানের শীষে দেশ গরব মিলে-মিশে।”
আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত জানানোর পর নির্বাচন কমিশন যথাসময় নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করবে। জনগণের বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিকামী জনগনকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সম্ভব সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। এর অংশ হিসেবে দেশের তিন‘শ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।
‘‘জনসমর্থিত এবং জনপ্রিয় দল হওয়ার কারণে প্রতিটি নির্বাচনি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, করাটাই স্বাভাবিক। একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এটি অবশ্যই গৌরব ও সম্মানের। দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেককে প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়।”
রাজপথের শরিকদেরও বিএনপির প্রার্থী করার সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন।
‘‘বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা দেশ এবং জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন দয়া করে। দলের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করবেন। আপনাদেরকে আমি আবারও স্বাধীনতার ঘোষকের সেই কথাটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’।”
