দুর্নীতি ও অনাচরের কারণে বিভিন্ন পর্যায়ের বাঘা বাঘা নেতারা ধরাশাহী হচ্ছেন। কিন্তু যশোরের কেশবপুর উপজেলার একটি ভাটার মালিক এত শক্তি দেখানোর মদদ পাচ্ছেন কোথায়? তিনি কি ধরাশাহী ওই সব নেতাদের চেয়েও ক্ষমতাধর? তার খুঁটোর জোর কি এত যে বছরের পর বছর বেআইনি কাজ করেও দাপট দেখিয়েই চলেছেন। গণমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে ১৪ মার্চ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাস জমি ও ব্যক্তি মালিকানার ধানী জমিতে ওই ভাটা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে উপজেলা প্রশাসন ভাটাটি বন্ধ করে দিলেও কোনো কিছুই তোয়াক্কা করছেন না। তিনি এত ক্ষমতাধর যে দিব্বি ভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইট ভাটা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে আইন বলে যে এটা জিনিস আছে তা ভাটায় মানা হয় বলে মনে হয় না। এ সব ভাটার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, সেগুলো সরকারি নিয়ম-নীতিমালা উপক্ষো করে চলছে। কৃষি জমিতে তো ভাটা স্থাপন করা হয়েছেই, তারপরও অভিযোগ রয়েছে ভাটাগুলো লোকালয়ে অবস্থিত। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, নষ্ট করা হচ্ছে আবাদি জমি এবং ক্ষতি করা হচ্ছে রাস্তাঘাট। কেশবপুরের এ ভাটার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ অভিযোগ করেছেন।
ভাটা অপ্রয়োজনীয় কিছু নয়। দেশের উন্নয়নে ভাটার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তাই বলে উন্নয়নের নামে তো এমন কাজ করা যাবে না যাতে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ উদ্দেশ্যে ভাটা পরিচালনার জন্য কতগুলো নিয়ম-নীতি সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু সেসব নিয়ম-নীতি ভাটা মালিকরা মোটেই পরোয়া করছে না। শতভাগ ভাটা এ ক্ষেত্রে বেপরোয়া বলে অভিযোগ রয়েছে। ভাটাগুলোর ওপর পরিবেশ অধিদফতর থেকে যে শর্ত আরোপ করা হয়েছে তার প্রায় শতভাগ তারা মানে না। লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ভাটা হতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে বাড়ির উঠান লাগোয়া ভাটা চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সড়ক-মহাসড়ক, রেলপথ থেকে ভাটা দূরে হতে হবে। কিন্তু এক রকম বলা যায় সড়কে, মহাসড়ক ও রেলপথের ওপরেই অনেক ভাটা দিব্বি চলছে। ভাটার ইট মাটি বালি প্রভৃতি বহনের গাড়িগুলো হথে হবে নিñিদ্র এবং বহনের সময় তা আবৃত করে রাখতে হবে। যাতে ধুলা-বালি উড়ে বা পড়ে পরিবেশ নষ্ট না করে। কিন্তু তার একটিও মানা হয় না। যে ট্রাকটি সড়কে চলার অনুপোযোগী হয়ে লক্কড়-ঝক্কড় হয়ে যায় সেই ট্রাকটি সড়ক থেকে সরিয়ে ভাটায় দেয়া হয়। এসব ট্রাক ভাটার মালামাল বহনের সময় পরিবেশের সর্বনাশ করে। এসব অনিয়মের বাস্তব উদাহরণ কেশবপুরের সুপার ব্রিক্স। এসব বিষয়গুলো প্রতি প্রশাসনের দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া অতি প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।