নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদর উপজেলার কেফায়েতনগর গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী মাসুদ হত্যা মামলায় পুনঃচার্জশিট দিয়েছে সিআইডি পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই বিল্টু কুমার দাস আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেছেন।
অভিযুক্তরা হলো, সদর উপজেলার গাইদগাছি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে বদরুজ্জামান পিন্টু, গাইদগাছি গ্রামের দক্ষিণপাড়ার আবুল হাসান সরদারের ছেলে ইব্রাহিম হোসাইন বাবু, আমানত আলী মোল্যা ওরফে আলী আকবরের ছেলে আব্দুল কাছেদ আলী রাজু, অভয়নগরের বনগ্রামের আজিজুর রহমান আইজের ছেলে মুরাদ হোসেন, প্রেমবাগ গ্রামের পশ্চিমপাড়া কাটাখাল এলাকার হাফিজুর রহমানের ছেলে শিমুল হোসেন শান্ত, শওকত আলী মোল্যার ছেলে আল-আমিন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া মোড়স্থ কেফায়েতনগর গ্রামের মৃত সোহরাব বিশ্বাসের ছেলে মাসুদ রানা একজন কাঠ ব্যবসায়ী। আসামিরা অভয়নগরের বনগ্রাম সুপারি বাগান জামে মসজিদের গ্রিল চুরির অপবাদ দেয় একই এলকার মৃত কায়কোবাদ গাজীর জামাই জুলফিকার আলীকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুলফিকার আলীকে তার শ্বশুর বাড়ি যেতে নিষেধ করে আসামিরা। ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট রাতে জুলফিকার আলীকে তার শ্বশুর বাড়িতে পৌছে দিতে মাসুদ রানা, ইসরাফিল, সজিব, সুমন ও মইনকে সাথে নিয়ে যায়। এই সংবাদ জানতে পেরে আসামিরা জুলফিকার আলীর শ্বশুর বাড়িতে হামলা করে মাসুদসহ অপরদের মারপিট করে গুরুতর জখম করে। এরপর আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাদের হাসপাতালে নেয়ার কথা বলে ওই বাড়ি থেকে ভ্যানে করে নিয়ে বনগ্রামের কাটাখাল মোড়ে নামিয়ে রেখে চলে যায়। পরে সংবাদ পেয়ে মাসুদের পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মাসুদ রানা মারা গেছে বলে চিকিৎসক জানান। এ ঘটনায় নিহত মাসুদের মা খাদিজা বেগম ৬ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে কোতোয়ালি থানা পুলিশ এজাহারনামীয় ওই আসামিদের অভিযুক্ত করে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এই ঘটনায় মাসুদ মারা গেলেও তার সাথে আহত হন ইসরাফিল, সজিব, সুমন ও মইন। তারা এই ঘটনায় আদালতে জবানবন্দিতে ওই এলাকার ইউপি সদস্য রাজিব হোসেন মাসুদকে হত্যার হুকুম দাতা এবং ফরহাদ, শামিম ও হাফিজুর মোল্যাসহ চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা মাসুদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। সে কারণে এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এই চারজনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চার্জশিটে তাদের অব্যাহতি দিয়েছিল। শুধু তাই নয় মাসুদকে হত্যার হুকুম দাতা রাজিব মেম্বারকে এই মামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে। ফলে মাসুদ হত্যাকা-টি ভিন্নখাতে নিতে পূর্বের তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের সাথে যোগসাজস করে হুকুম দাতাসহ ওই চারজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে। ফলে বাদী ওই চারজনের ব্যাপারে নারাজি আবেদন করেন আদালতে। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডি পুলিশের এসআই অনুপ কুমার দাস। অনুপ কুমার দাসের অন্যত্র বদলী হওয়ায় এসআই বিল্টু কুমার দাস মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনিও আসামিদের সাথে যোগসাজস করে পূর্বের মতই চার্জশিট দাখিল করেছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি। চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা জামিনে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।