নিজস্ব প্রতিবেদক
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, এই দেশে যখন স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতসাৎ করার জন্য বিভিন্ন হুমকি এসেছে তখনই জনতার সাথে পুলিশ ঝাপিয়ে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উঁচুতে তুলে ধরে অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পুলিশ নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিতে কুণ্ঠিত বোধ করেনি কখনো।
সোমবার সন্ধ্যায় যশোর পুলিশ লাইন মাঠে যশোরে বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজিপি এ মন্তব্য করেন।
একসময় দক্ষিণাঞ্চল ছিলো সন্ত্রাসীদের জনপদ ছিলো উল্লেখ করে আইজিপি আরো বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছিলেন। সেই নীতিতে পুলিশের সকল সদস্যরা সৎ নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। শুধু এই অঞ্চলে নয়; দেশের সকল স্থানে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে পুলিশ জনতার পুলিশ হিসাবে কাজ করছে। ফলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দক্ষিণ-পশ্চিমাঅঞ্চল ব্যবসা বান্ধব জনপদে পরিণত হয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলার সঙ্গে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। শারীরিক গঠন ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘অনেক কারণে পুলিশের সঙ্গে খেলাধুলার সম্পর্ক রয়েছে। শারীরিক গঠন ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পর্যায়ের খেলাধুলায় বাংলাদেশ পুলিশের অবস্থান রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। খেলাধুলায় বাংলাদেশ পুলিশের অংশগ্রহণ আরও সুদৃঢ় করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। প্রত্যেক ইউনিটেই খেলাধুলা চর্চা বাড়াতে হবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরি, খুলনা রেঞ্জরের ডিআইজি মইনুল হক। এসময় তিনি বলেন, এই বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সমাজের সব শ্রেণী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত রয়েছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর শারিরিক আনন্দ, মানসিক বিকাশ ঘটে। আমাদের পুলিশ বাহিনী নানা প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে সময় পার করে। পুলিশ জনতার যে বন্ধন, আরো সবৃদ্ধ হবে এধরণের আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। একই সাথে মানুষের অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নতদেশে পরিণত হবে। সরকারের যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে সেটা পুলিশ-জনতাই ভ’মিকা রাখবে। তিনি যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন সেটা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদার। এর আগে, দুপুরে বেলুন উড়িয়ে এই বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন আইজিপি চৌধুরি আবদুল্লাহ আল মামুন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগের ১০ জেলার পুলিশ সুপার ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, যশোরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিরা।
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ২৭টি ইভেন্টের মধ্যে প্রথমদিন ১২টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন আইজিপি চৌধুরি আবদুল্লাহ আল মামুন এবং বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) সভানেত্রী ও আইজিপি সহধর্মিণী ডা. তৈয়বা মুসাররাত জাঁহা চৌধুরি। এর আগে, পুলিশ সদস্যদের অংশগ্রহণে প্যারেড, জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের মনোজ্ঞ ডিসপ্লে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একের পর দেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে দেশের সংকটকাল পর্যন্ত পুলিশের ভ’মিকা উঠে আসে মনোজ্ঞ ডিসপ্লেতে। এর পর পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ১২টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়।