কল্যাণ ডেস্ক
খুলনার তেরখাদা উপজেলার আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের আলোচিত পলাশ শেখ ওরফে সবুজ হত্যার দায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ওই দুই আসামি পলাতক ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের তকুব্বর ফকিরের ছেলে রোমান ফকির ও আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের মহিউদ্দিন মোল্লার ছেলে মিলু।
রোববার খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
অপরদিকে, এ মামলার অপর দুই আসামি মুরাদ শরীফ ও খসরু মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আনিত অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছে আদালত।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আলমঙ্গীর হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, তেরখাদা উপজেলার আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের জনৈক লুৎফর রহমানের ছেলে পলাশ ওরফে সবুজ। হত্যা মামলার ৩নং আসামি মিলু মোল্লার বাড়িতে পলাশের প্রায়ই যাতায়াত ছিল। এ কারণে মিলু মোল্লা তার স্ত্রী রিক্তা বেগম ও পলাশকে সন্দেহ করতেন।
এ অবস্থায় মিলু মোল্লা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর রাত ৯টায় বাড়ি থেকে পলাশকে ডেকে নেন। তারপর অনেক খোঁজ নেয়ার পরও পলাশের কোনো সন্ধান মেলেনি। পরবর্তীতে পলাশের পরিবার গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে, আসামি মিলু মোল্লা তার স্ত্রী ও পলাশের অবৈধ প্রেমকে ঠেকানোর জন্য অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বারাসাত গ্রামের উত্তর পাশে বিলের ভেতর নেন। এরপর গামছা পেঁচিয়ে পলাশকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
ঘটনার পর থেকে আসামিরা আত্মগোপনে থাকেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর আসামি রোমান মোল্লা তার শ্বশুরবাড়ি রাজাপুর এসে স্থানীয় কয়েকজনের সামনে পলাশ হত্যাকাণ্ডের গোমর ফাঁস করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওইদিন নিহত পলাশের মা বেগম বিবি বাদী হয়ে ৪ আসামির নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে এ হত্যা মামলার আসামি রোমান ফকির গ্রেফতার হয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডে নিজ দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন।
২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল এ মামলার আসামি রোমান ফকিরের দেখানো স্থান থেকে পলাশের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেরখাদা উপজেলার পাতলা পুলিশ ক্যাম্পের এসআই বাবর আলী খান ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ২২ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: কয়রায় ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার লাঞ্ছিতের অভিযোগ