বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি
বাগেরহাটে মাছের ঘের নিয়ে বিরোধের জেরে আনারুল শেখ (৫৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের মামলায় কালাম বয়াতি ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে নিবাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৯ জুন) গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল শেখের স্ত্রী মাফুজা বেগম বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত পৌর যুবলীগ সদস্য সোহেল হাওলাদার ওরফে কালা সোহেলকে প্রধান করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার সন্ধ্যায় নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এসময় স্বজনরা খুনিদের শাস্তি দাবি করেছে। রাতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আনা বাগেরহাট পৌর শহরের বাসাবাটি এলাকার আব্দুল গনি শেখের ছেলে। তিনি বাগেরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
১৭ জুন দুপুরে বাগেরহাট সদর উপজেলার মেরিন ইনস্টিটিউটের সামনে নাগের বাজার এলাকার সোহেল হাওলাদার ও রাখা হাওলাদারসহ ৭-৮জন সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল শেখ ওরফে আনার ওপর হামলা করে। আনাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যান তারা। পরে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনারুল।
নিহতের ছোট ভাই বাচ্চু শেখ বলেন, সোহেলের খালু কালাম বয়াতির সঙ্গে ঘের নিয়ে বিরোধ ছিল আমার। মেঝ ভাইয়ের (আনারুল) সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ ছিল না। তারপরও তারা ভাইকে প্রকাশ্যে মেরে ফেলল।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের বৈটপুর এলাকার চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্রের পেছনের একটি সরকারি খাল দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঘের করতেন প্রভাবশালীরা। এই ঘের দখল নিয়ে বাচ্চু শেখ ও কালাম বয়াতীর মধ্যে বিরোধ চলছিল।
এই বিরোধের জেরেই হত্যাকাণ্ড ঘটে। দুই পক্ষই সরকার দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অভিযুক্ত সোহেল হাওলাদার বাগেরহাট সদর উপজেলার নাগেরবাজার এলাকার রশীদ হাওলাদারের ছেলে।
বাগেরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আনারুল ইসলাম ওরফে আনা হত্যাকাণ্ডে জড়িত এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য খুনিদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মোংলায় বসতঘরে আগুন, স্বামী-স্ত্রীসহ দগ্ধ ৪