নিজস্ব প্রতিবেদক
অনুমোদিত ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটন ইলিশের মধ্যে সরবরাহ সীমিত থাকায় গত দুইদিনে মোট ৫৬.২৫ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাতে ৩৭.৪৬ মেট্রিকটন এবং বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ১৮.৭৯ মেট্রিকটন ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল বন্দর পরিচালক শমীম হোসেন।
বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টিন অফিসার সজীব সাহা বলেন, মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করেছি যে রপ্তানির জন্য নির্বাচিত প্রতিটি ইলিশ স্বাস্থ্যসম্মত, রোগমুক্ত এবং আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী যোগ্য। এই পরীক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, যে প্রতিটি চালান নিরাপদ ও উচ্চমানের। এছাড়া, সরবরাহ সীমিত থাকায় দুইদিনের রপ্তানি অনুমোদিত পরিমাণের তুলনায় কম হলেও আমাদের মূল লক্ষ্য মানসম্পন্ন ইলিশ রপ্তানি বজায় রাখা।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করেছে মেসার্স প্যাসিফিক সি ফুড ১.৬৩ মেট্রিকটন, মেসার্স এমভি সি ফুড ৪ মেট্রিকটন, মেসার্স তানিশা এন্টারপ্রাইজ ১.৩৬ মেট্রিকটন, মেসার্স সততা ফিশ ৩.৮ মেট্রিকটন, মেসার্স এমএপি ইন্টারন্যশনাল ৩ মেট্রিকটন, মেসার্স জেএস এন্টারপ্রাইজ ৫ মেট্রিকটন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ রপ্তানি করেছে সততা ফিশ ৩.৬ মেট্রিকটন, তানিশা এন্টারপ্রাইজ ১.৪ মেট্রিকটন, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ ১২.২ মেট্রিকটন, লাকী ট্রেডিং ১৬.৮ মেট্রিকটন ও স্বর্ণালি এন্টারপ্রাইজ ৪ মেট্রিকটন ইলিশ মাছ। ভারতের কলকাতার পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ন্যশনাল ট্রেডিং, এফএনএস ফিশ, জয় শান্তসী, মা ইন্টারন্যাশনাল ও আর জে ইন্টারন্যাশনাল ইলিশ আমদানি করে।
বাংলাদেশ সরকার আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে মোট ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এ অনুমতি ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন, ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে (মোট ৭৫০ টন), ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৪০ টন করে (মোট ৩৬০ টন) এবং দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন করে (মোট ৪০ টন) ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বেনাপোল মৎস্য কোয়ারেন্টিন অফিসার সজীব সাহা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে। প্রতিকেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১২.৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত বছর (২০২৪) ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টনের অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু বেনাপোল ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সব মিলিয়ে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮০২ টন। এর মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে একাই রপ্তানি হয়েছে ৫৩২.৩ মেট্রিকটন।
স্থানীয় ইলিশ মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সততা ফিশ এর ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম বলেন, দূর্গাপূজা ও আসন্ন উৎসবের কারণে ইলিশের চাহিদা বেশি। আমরা চেষ্টা করছি বাজার চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ সরবরাহ বজায় রাখতে। তবে মাছের সীমিত পরিমাণ রপ্তানিতে কিছুটা বাধা থাকলেও আমাদের কার্যক্রম সচল রয়েছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শমীম হোসেন বলেন, সরকারি অনুমোদিত ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটনের মধ্যে গত দুইদিনে মোট ৫৬.২৫ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ৩৭.৪৬ মেট্রিকটন এবং বৃহস্পতিবার ১৮.৭৯ মেট্রিকটন ইলিশ ভারতে পাঠানো হয়েছে। সরবরাহ সীমিত হলেও প্রতিটি চালান পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য অনুমোদিত পরিমাণের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ও মানসম্পন্ন ইলিশ রপ্তানি নিশ্চিত করা।