নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায় ২০২২। স্বাগত ২০২৩। রাত পোহানোর সঙ্গে সঙ্গে একটি বছরের যবনিকাপাত হয়ে নতুন বছরের সূর্যোদয় হলো। এভাবে একটির পর একটি বছর কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। বয়স বাড়ছে পৃথিবীর। বয়স বাড়ছে আমাদের। একটি বছর শেষ হয়। মানুষ সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে আনন্দ-উৎসবে নতুন বছরকে বরণ করে। কিন্তু, কেউ জানে না, কী অপেক্ষা করছে তার জন্য অনাগত দিনে।
মহাকালের আবর্তে বিলীন হয়েছে ২০২২ সাল। এ বছরের সকল দুঃখ-বেদনা ভুলে মধ্যরাতে বিশ্বের সাথে বাংলাদেশও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন আশা নিয়ে বরণ করছে ২০২৩ সালকে। বিশ্বজুড়ে এবারও কোটি কোটি মানুষ নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে।
‘খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২৩’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, নববর্ষ সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। সময়ের চিরায়ত আবর্তনে খ্রিষ্টীয় নববর্ষ আমাদের মাঝে সমাগত। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি।
বিরাজমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিবর্গের প্রতি দুস্থ, অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর নববর্ষকে বরণ করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বর্ণাঢ্য নানা আয়োজন করা হলেও করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর উৎসবের আমেজ ছিল অনেকটাই ম্লান। এবার তার সাথে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২২ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ। আমরা গত বছর ২৬ জুন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু চালু করেছি। ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার মেট্রোরেল যোগাযোগ চালু করেছি। ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় উন্নয়নকৃত ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন করেছি।
তিনি বলেন, ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ সম্পন্ন করেছি। ৭ নভেম্বর দেশের ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু নির্মাণ করে উদ্বোধন করেছি। ১৯ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-২ এর রিঅ্যাক্টও প্রেসার ভেসেল স্থাপন করেছি। ২১ মার্চ পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (১ম পর্যায়) উদ্বোধন করেছি। আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে।
নববর্ষ মানেই সকলের মাঝে জাগায় প্রাণের নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা পেছনে ফেলে নতুন বছরে অমিত সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যাওয়া।
দূরে থাকার, বিচ্ছিন্নতার, আতঙ্কের, মহামারির আরো একটি বছর গেল। জড়তা, ভয়কে পাশে ঠেলে আবার আমরা জেগে উঠছি- নতুন স্বাভাবিকতায়। নতুন সূর্য উঁকি দিল পুরোনো গ্লানি ভুলে। নতুন একটি বর্ষে পদার্পণ করল বিশ্ব। শান্তি, সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনার অপার বারতা নিয়ে শুরু হলো আরো একটি নতুন বছর। স্বাগত খ্রিস্টীয় নববর্ষ ২০২৩। বিদায়ি বছরের ব্যর্থতাকে সরিয়ে রেখে নতুন বছরে নতুনভাবে শুরু হলো পথচলা।
নতুন বছর মানে নবযাত্রা। নতুন করে পুরোনো সমস্যা মোকাবিলা করে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পালা। পুরোনো বছরের সংশয়, সংকট, উদ্বেগ কাটিয়ে উঠে নতুন ভাবনা নতুন আশায় নতুন করে দিনযাপনের শুরু হোক। এ বছর হোক উত্তরণের, কালের যাত্রায় এগিয়ে চলার। নতুনের আবাহনে জেগে উঠুক সারা দেশ ও বিশ্ব। বয়ে আনুক সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।