কল্যাণ ডেস্ক
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের ডাকা দ্বিতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি চলছে। সড়ক, রেল ও নৌ পথের এই অবরোধ কর্মসূচি আগামী মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৬টায় শেষ হবে। এরপর মঙ্গলবার বিরতি দিয়ে চলতি সপ্তাহের শেষ দুই দিন বুধ ও বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গীরা বলছে, অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনের সোমবার (৬ নভেম্বর) পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে। যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, তাহলে মঙ্গলবার কর্মসূচিতে বিরতি দিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। সোমবার দুপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটি এবং গণতন্ত্র মঞ্চের বৈঠক আছে। সেখানে কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, নতুন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে। আগামীকাল আমরা বসে পরবর্তী কর্মসূচি কী দেওয়া যায় তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
গণতন্ত্র মঞ্চের একটি দলের শীর্ষ এক নেতা বলছেন, মঙ্গলবার কর্মসূচি না রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে। কারণ সপ্তাহে একদিন মানুষ যাতে প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে পারে সেজন্য বিরতি দেওয়া হবে। তবে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্সসূচি ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারে ক্র্যাকডাউন চলছে : রিজভী
মঞ্চের সূত্রগুলো বলছে, সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সেখানে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা স্থগিত রাখতে নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানানো হবে। কারণ নির্বাচন কমিশন নিজেই শনিবার (৪ নভেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বলেছেন- নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূলে নেই। যা বিরোধী দলগুলো প্রতিনয়িত বলে আসছে। এর বাইরে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া হবে সংবাদ সম্মেলন থেকে।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে সামনে রেখে আগামী সপ্তাহের ঢাকায় বড় ধরনের কর্মসূচি পালন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত রয়েছে। সেখানে রাজধানীতে বড় ধরনের শো-ডাউন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তার আগে নিয়মতান্ত্রিকভাবে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২ ঘণ্টায় ১০ বাসে আগুন
নাম না প্রকাশ শর্তে বিএনপির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার করে সরকার ভাবছে আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে। বাস্তবে তা এবার হবে না। কারণ প্রথম সারির নেতারা গ্রেপ্তার হলে দ্বিতীয় সারির নেতারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে, সেটা আগেই সিদ্ধান্ত আছে। এরপর প্রয়োজনে তৃণমূল থেকে আন্দোলনের নেতৃত্বে দেওয়া হবে। তারপরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
‘কিন্তু আন্দোলন করতে গিয়ে এরইমধ্যে সিনিয়র নেতাদের বাইরে তৃণমূলের অনেক নেতা কারাগারে গিয়েছে। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে কতদিন আন্দোলন চালিয়ে নেওয়া যাবে, সেটা নিয়ে একটা সন্দেহ তো থাকেই’, বলেন বিএনপির ওই নেতা।
গত রোববার এক সংবাদ বিবৃতিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ধারাবাহিকভাবে নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে এবং জনগণ আরও বলিয়ান হচ্ছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ছাড়া জনগণ রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে না।