ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদরের আড়ুয়াকান্দি গ্রামে ছাগল চুরির কথা বলে ডেকে নিয়ে সাকিবকে (১৭) গলা কেটে হত্যা করেন মনির মোল্লা ওরফে আশরাফুল মোল্লা (১৯)। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে মনির এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে পুলিশ সুপার আশিকুর রহমান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে সাকিব হত্যা মামলার আসামি মনিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। ঝিনাইদহ শহরের উদয়পুর গ্রামে নানা ওসমান লস্করের বাড়ির বাসিন্দা সাকিব মাগুরার ফুলবাড়ী গ্রামের শামিমের ছেলে। অন্যদিকে আসামি মনির মোল্লা যশোরের বাবলাতলা এলাকার বাসিন্দা হলেও বাস করতে ঝিনাইদহ শহরের উদয়পুর গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে।
পুলিশ সুপার বলেন, সদর উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের পাটক্ষেতে এক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে অজ্ঞাত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় রাতে সদর থানায় মামলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনা প্রচার পেলে শাকিল আহমেদ নামের এক ব্যক্তি লাশ শনাক্ত করে তার ভাগনে বলে জানান। শাকিল বলেন, ১ জুলাই সাকিবের সঙ্গে মনির মোল্লাকে ঘুরতে দেখা গেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার মনির মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।
আশিকুর রহমান বলেন, আসামির জবানবন্দির ভিত্তিতে জানা যায়, কয়েক মাস আগে উদয়পুর গ্রামে দুটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। তারা দুজন মিলেই মোবাইল দুটি চুরি করলেও সাকিব গ্রামে বলে বেড়ায়, মনির মোবাইল চুরি করেছেন। ভয়ে মনির এলাকা থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকেন। কিছুদিন পর তিনি এলাকায় ফেরেন। সেই থেকে মনে মনে তিনি সাকিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
এসপি আরও বলেন, গত ১ জুলাই উদয়পুর গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে সাকিবকে আসতে বলেন তিনি। এ সময় দুজন মিলে ছাগল চুরির কথা বললে সাকিব তাতে রাজি হয়। রাতে তাকে বিসিকের মোড়ে থাকতে বলা হয়। দুপুরে আসামি বাড়ি থেকে একটি দা এনে বিসিক এলাকার একটি দোকানের নিচে লুকিয়ে রাখেন। গভীর রাতে সাকিব বিসিক মোড়ে আসে। আসামি বিসিক মোড় থেকে ব্যাগে করে দা, প্যাকেট বিস্কুট, পানি, সিগারেট নিয়ে সাইকেলে করে তারা আড়ুয়াকান্দি গ্রামের একটি পাটক্ষেতে যায়।
তিনি বলেন, নিরাপদে চুরির জন্য তারা রাত গভীর হওয়ার অপেক্ষা করে। এ সময় দুজন গাঁজা সেবন করে। সাকিব একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়লে মনির তাকে গলা কেটে হত্যা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
এসপি বলেন, আসামির দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত দা, গামছা ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়। আসামি মনির ইতিমধ্যে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান পুলিশ সুপার।