নিজস্ব প্রতিবেদক
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াতের পর আওয়ামী জাহেলিয়াত স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আওয়ামী জাহেলিয়াতের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে হেফাজতের কর্মীরা। শাপলা চত্বরে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ১৪০০ নেতাকর্মীকে। ভারতের তাঁবেদার সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে হেফাজত নেতাকর্মীদের ওপর এ নির্যাতন চালানো হয়।’
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকালে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে শানে রেসালাত সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজতে ইসলাম যশোর জেলা শাখা এ শানে রেসালাত সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সংগঠনটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশকে ইসলামশূন্য করতে নানা ষড়যন্ত্র চলেছে। এই দেশে বাহাত্তরের চেতনাকে একাত্তরের চেতনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়। জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ঠিক একই কায়দায় নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের অভূতপূর্ব ঐক্য বিনষ্ট করতে বাংলাদেশের শত্রুরা বিদেশের মাটিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে।’
কেন্দ্রীয় ঈদগাহে বিপুল জনসমাগমের কারণে পাশের মুজিব সড়ক, মাওলানা মোহাম্মদ আলী সড়ক, আদালত ও পৌরসভা সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দুপুরের পর থেকে শহরের প্রধান সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ।
প্রধান বক্তা বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যেমন নস্যাৎ করা হয়েছিল ঠিক একই কায়দায় জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জন শুধু নয় মাসের লড়াইয়ে হয়নি। স্বাধীন দেশ অর্জন করতে আমাদের যুগ যুগ ধরে লড়াই করতে হয়েছে। তিন তিনটি আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। প্রথম লড়াই ছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে, এরপর ১৯৪৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের দাদাদের বিরুদ্ধে এবং সর্বশেষ ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এসব লড়াইয়ে এদেশের অসংখ্য আলেম রক্ত দিয়েছে। অথচ এই স্বাধীনতার চেতনাকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার নানাভাবে বিকৃত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে এদেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অভূতপূর্ব ঐক্য হয়েছিল। সেই ঐক্য এখন বিতাড়িতরা ভারতে বসে বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। যেকোনও মূল্যে এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নাস্তিকতাবাদের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলে হেফাজত মোকাবিলা করবে, কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে কোনও ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলেও সেন্টমার্টিন থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি ইঞ্চি ভূমি রক্ষা করা হবে।’
সংগঠনের যশোর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল করীম যশোরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা নাজমুল ইসলাম কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন এবং কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মুশতাক আহমেদ।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ, খুলনা জেলা সভাপতি মুফতি গোলামুর রহমান, মাগুরা জেলা সভাপতি কাজী জাবেদ বিন মুহসীন তাজাল্লা, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মাওলানা ওসমান গনি, মুফতি আরিফ বিল্লাহ, যশোর জেলা শাখার উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুল মান্নান, মুফতি মুজিবুর রহমান, হাফেজ মাওলানা বেলায়েত হোসেন, মাওলানা হামিদুল ইসলাম, মাওলানা নাজির উদ্দীন, মুফতি শামসুর রহমান, মুফতি হাফিজুর রহমান, মাওলানা মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
