নিজস্ব প্রতিবেদক
যেন সিনেমার মতো সেই রাত। যশোর-নড়াইল মহাসড়কের হামিদপুর বাজারের পাশে হঠাৎ করে পুলিশের চেকপোস্ট। অন্ধকারে হেডলাইটের আলো কেবল দু’টি আসা-যাওয়ার পথ তৈরি করে দিচ্ছে। ঠিক তখনই লিটন ট্রাভেলস ও শিবচর স্টার ডিলাক্সের দুটি বাস চেকপোস্টে থামে। পুলিশের সংকেত দেখেই আচমকা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালাতে শুরু করে কয়েকজন যাত্রী। মুহূর্তেই টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
পুলিশ ঘিরে ফেলে দুটি বাস। বিশৃঙ্খলা, আতঙ্ক আর দৌড়াদৌড়ির মাঝে আটক করা হয় ৭৮ জনকে। তল্লাশি করে উদ্ধার হয় ককটেল, পেট্রোল বোমা এবং লাঠি—যেন অদৃশ্য কোনো পরিকল্পনার ছায়া। ওই রাতেই দায়ের হয় নাশকতা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলা। জড়ানো হয় কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মী—মোট ৯২ জনকে।
কিন্তু সময় বদলে দেয় ছবির দৃশ্য।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে বেরিয়ে আসে ভিন্ন চিত্র। অভিযোগের প্রমাণ না মিলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ মোট ৯২ জনের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াহিদুজ্জামান।
অবশ্যই তালিকাটি ছোট নয়—মারুফুল ইসলাম মারুফ, মুনির আহম্মেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, কাজী আজম, শফিয়ার রহমান, এম তমাল আহম্মেদ, আনছারুল হক রানা, আঞ্জারুল হক খোকন, আমিনুর রহমান মধু, নাজমুল হোসেন বাবুল, রাজিদুর রহমান সাগর, হাজী আনিসুর রহমান মুকুল,আব্দুস সামাদ আজাদ, একে শরফুদ্দৌলা ছটলুসহ আরও অনেকের নাম এতে যুক্ত।
যে রাতটি সন্দেহে ঢেকে গিয়েছিল, তদন্ত শেষে সেই সন্দেহের মেঘ সরেছে। পুলিশের প্রতিবেদনে স্পষ্ট—ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় ওই ৯২ জনের অব্যাহতি চেয়ে রোববার আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
