কল্যাণ ডেস্ক
শেষদিকে চলে এসেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০২২। শুরু থেকেই মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ ছিল একটি ‘আকর্ষণ ছিল একটি ‘পরী পালং খাট’। খাটটি বিক্রির জন্য এক কোটি টাকা দাম হাঁকা হলেও দাম উঠেছে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫১ লাখ টাকা। জানা গেছে, এক ভরি সোনা ও একটি এফজেড মোটরসাইকেল উপহার দিয়েও মিলছে না এই খাটের ক্রেতা।
শুক্রবার রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে চলমান বাণিজ্যমেলায় খাটটির ডিজাইনার ও মালিক মো. নুরুন্নবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজকীয় কারুকাজ ও পরীর ডিজাইনে খাটটি তৈরি করা হয়েছে। কোনোরকম মেশিনের ব্যবহার ছাড়াই সর্বোচ্চ নৈপুণ্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খাটটির দাম এক কোটি টাকা চাইছি। যিনি খাটটি কিনবেন তাকে উপহার হিসেবে একটি ইয়ামাহার এফজেড মডেলের মোটরসাইকেল ও এক ভরি সোনা উপহার হিসেবে দেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত আশানুরূপ দাম পাইনি। সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, মেলায় খাটটির স্টলের সামনে একটি ব্যারিকেড দেওয়া আছে। ব্যারিকেডের কাছাকাছি থেকে খাটটি দেখছেন দর্শনার্থীরা। খাটের চার কোণে দাঁড়িয়ে আছে পরীর আদলে চারটি মূর্তি। বিভিন্ন অংশে আরো ১২টি পরী রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে শীর্ষ ২০ খেলাপির তালিকা প্রকাশ অর্থমন্ত্রীর
খাটটি সম্পর্কে নুরুন্নবী বলেন, পরীর ডিজাইনে তৈরি করায় নাম দেওয়া হয়েছে ‘পরী পালং খাট’। এটি খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় তৈরি। এর বিশেষত্ব হলো এই খাটের ডিজাইন কিংবা ক্যাটালগ বিশ্বের কোথাও নেই। সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা থেকে শখের বশে খাটের ডিজাইন করেছে আমার ভাই। তৈরি করেছে স্থানীয় কারিগর আবু বক্কর সিদ্দিক।
তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালে আমার ভাই ও তার এক সহকারী কাজ শুরু করেন। তিন বছর দুই মাসে কাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। কারিগরের মজুরিসহ প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্য মেলায় স্টল নেয়াসহ নানা খরচ মিলিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
নুরুন্নবী বলেন, খাটের চার কোণে বড় চারটি পরীর হাতে চারটি প্রজাপতি রয়েছে। এর পাশে চারটি চাঁদ ও ছয়টি সূর্যের নকশা আছে। বিভিন্ন অংশে রাজকীয় কারুকাজ রয়েছে। পাটাতনগুলো ভাঁজ করে তুলে রাখার ব্যবস্থা আছে। চট্টগ্রামের সেগুন কাঠের ফাইবার দিয়ে এটি তৈরি। প্রায় ২০০ ঘনফুট কাঠ থেকে ৮৫ ঘনফুট কাঠের ফাইবার বের করে খাটটি তৈরি করা হয়েছে।
মেলার সময় তো প্রায় শেষ পর্যায়ে, সর্বশেষ কত হলে খাটটি বিক্রি করবেন জানতে চাইল নুরুন্নবী বলেন, এটা একেবারেই আলোচনা সাপেক্ষে। আমরা এক কোটি টাকা চেয়েছি। কাছকাছি দাম হলে ছাড়বো।
এদিকে খাটটি দেখতে অসংখ্য দর্শনার্থীর ভিড় জমেছে স্টলটির সামনে। কেউ সেলফি তুলছেন, আবার কেউ শুধু খাটের নানা প্রান্ত থেকে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ ছুঁয়ে দেখার চেষ্টাও করেছেন। তবে মালিকপক্ষ ও বিক্রেতার নিষেধ থাকায় কেউ যেন খাটের কাছে যেতে না পারেন, স্পর্শ করতে না পারেন, সেজন্য সার্বক্ষণিক দু’জন কর্মী স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকছেন।
আরও পড়ুন: যশোরের সাতমাইল বাজারে অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট শাখা উদ্বোধন