কামরুল ইসলাম, অভয়নগর: যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ দিন যাবৎ মেডিসিন, চক্ষু, যৌন ও চর্ম, সার্জারি, অর্থপেডিক, গাইনী, নাক কান গলা(ইএনটি) কার্ডিওলজি, শিশু ও এনেসথেসিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ শূন্য থাকায় কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা এলাকাবাসী।
অভয়নগর উপজেলায় নৌ বন্দর রেল পথ থাকায় দেশের বৃহত্তম সার, কয়লা, খাদ্য শস্যসহ নানা ধরনের মোকাম গড়ে উঠেছে। এখানে বিদেশ থেকে আমদানী পণ্যের ওপর নির্ভর করে নানা শিল্প কারখানাও গড়ে উঠেছে। উপজেলায় স্থায়ী বাসিন্দা আছে প্রায় তিন লাখ তার ওপর ওই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী ও শ্রমিক মিলে আরো প্রায় এক লাখ লোক এখানে বসবাস করেন। যে কারনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তারা ছাড়া প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও হামলায় আহতরা জরুরি রোগী ভর্তি হন।
চিকিৎসকেরা জানান, এতো রোগরী চাপ অন্য কোন উপজেলায় দেখেনি। দেশ স্বাধীনের পর হাসপতালটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০ শয্যা বিশিষ্ট। পরে ২০০৫ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। মেডিকেল অফিসাররা সাধারণ রোগের চিকিৎসা দিতে পারেন।
জটিল রোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগে কমপক্ষে একজন জুনিয়র কনসালটেন্ট থাকার দরকার। যে কারনে জটিল রোগের চিকিৎসা দিতে রোগীদের খুলনা ও যশোরে স্থানান্তর করা হয়। এতে গরীব রোগীদের চিকিৎসা নিতে অনেক অর্থ ও সময় অপচয় হয়।
বিধি মেতাবেক ৫০ শয্যা হাসপাতালে মেডিসিন, চক্ষু, যৌন ও চর্ম, সার্জারি, অর্থপেডিক, গাইনি, নাক কান গলা(ইএনটি) কার্ডিওলজি, শিশু ও এনেসথেসিয়া বিভাগের প্রত্যেকটিতে মেডিকেল অফিসারের পাশাপাশি একজন করে জুনিয়র কনসালট্যান্ট নিযুক্ত থাকবে। জটিল রোগীদের ওই সব কনসালটেন্ট’রা চিকিৎসা দেবেন। হাপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলে প্রথম প্রথম কয়েক মাস অর্থপেডিক, ইএনটি, যৌন ও চর্ম বিভাগে কনসালটেন্ট নিযুক্ত হন। কিন্তু প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার সুবিধার জন্য তারা উপজেলা সদর থেকে বদলি হয়ে জেলা ও বিভাগীয় শহরে চলে গেছেন। এছাড়া অন্যান্য বিভাগের কোন কনসালটেন্ট এখানে নিযুক্ত হতে দেখা যায়নি।
স্থানীয় মশিয়ার রহমান জানান, হাসপাতালে একটি জটিল রোগী আসলে খুলনা ও যশোরে স্থানান্তর করা হয়। এতে রোগীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাছাড়া অনেক রোগী পথেই মারা যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান জানান, এখানে দীর্ঘ দিন যাবৎ মেডিসিন, চক্ষু, যৌন ও চর্ম, সার্জারি, অর্থপেডিক, গাইনী, নাক কান গলা(ইএনটি), কার্ডিওলজি, শিশু ও এনেসথেসিয়া বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদ শূন্য রযেছে। এরমধ্যে কিছু দিন আগে এনেসথিয়া পদে (অজ্ঞান) কনসালটেন্ট নিযুক্ত হয়েছেন। এছাড়া সালেহা শারমিন নামে একজন গাইনী কনসালটেন্ট নিযুক্ত হবেন।
গাইনী কনসালটেন্ট আসলে এখানে নিয়মিত প্রসূতি রোগীসহ অনন্য মেয়েলী রোগী অপারেশন করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো জানান, এখানে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ ৮ থেকে ১০ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। বর্তমানে ওই সব পদে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক নিয়ে প্রেষনে দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে।