ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার ঘটনায় মো. সুজন (৩৫) নামে এক যুবকের মৃত্যুণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আব্দুল মতিন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত সুজন শৈলকুপা উপজেলার দোহা-নাগিরাট গ্রামের মো. মো. বিশ্বাসের ছেলে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অজিত কুমার বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায়ের বিবরণ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার ছয় বছর আগে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নোন্দীরগাতী গ্রামের সালেহা বেগমের মেয়ে ইয়াসমিনের বিয়ে হয় মো. সুজনের সঙ্গে। পরে তাদের ঘরে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকেই সুজনের পরকীয়া নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ হত। এর জেরে সুজন তার স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন পরে সুজন স্ত্রী ও সন্তানের সঙ্গে বিবাদে জড়াবে না বলে নিজের বাড়ি নিয়ে যায়। এর ১৫ দিন পর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৮ তারিখ থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।
সুজনের পরিবারের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, ওরা বেড়াতে গেছে। কিছুদিন পর সুজনের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায় না। পরে ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ওই বছরের ২২ মার্চ তাদের পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে অভিযোগ দায়ের করে ইয়াসমিনের মা সালেহা বেগম। পরে আদালত সেটি এজাহার হিসাবে গণ্য করেন।
আদালতের নির্দেশে শৈলকুপা থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে সুজন শেখ ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার মৈজদ্দি-মাতব্বরকান্দি গ্রামে আত্মগোপনে আছে। সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুজন স্বীকার করে যে তার স্ত্রী ইয়াসমিনকে ফরিদপুর জেলার পদ্মানদীর তালুকের চরে শ্বাসরোধ করে এবং ছেলে ইয়াসিনকে গলা টিপে হত্যা করে বালিচাপা দিয়ে রেখেছে। পরে পুলিশ ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই মামলার শুনানি শেষে আদালত সুজনকে স্ত্রী ও সন্তান হত্যার দায়ে মৃত্যুদ- প্রদান করেন।