নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক আরজু খাতুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই মামলায় চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আত্মসমর্পণ করে ২২ দিন হাজতবাস করেন আরজু খাতুন। তিনি হাজতবাসের তথ্য গোপন করে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হলেও কারাগারে অবস্থানের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা শিক্ষা অফিসার বরবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পাঁচজন প্রধান শিক্ষক। তবে জেলা শিক্ষা অফিসার বলছেন, অনুপস্থিত থাকায় বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তথ্য গোপন করে কারাবাসের বিষয়টি কিছুদিন আগে অবগত হয়েছি। অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ঝিকরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষক আরজু খাতুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ৫২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৪৯ টাকার সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপন করার অভিযোগে ২০২২ সালে ৫ এপ্রিল যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন পান। এরপর ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আরজু খাতুন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। ২২দিন কারাবাস শেষে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি জামিন লাভ করেন। তিনি ২২দিন হাজতবাস করলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কিংবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেননি। জানুয়ারি মাসের হাজিরা খাতায় একদিনের ছুটিসহ ২২দিন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬ এর (২) ও ২৭ এর (১) ধারায় চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক আরজু খাতুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার দুটি ধারা বাতিল হয়েছে। মামলাও খারিজ হয়ে যাবে।
তথ্য গোপন করে কারাবাস প্রসঙ্গে আরজু খাতুন বলেন, আমি যেখানেই থাকি, সেটি কোন বিষয় নয়। আমার বিরুদ্ধে কোন ওয়ারেন্ট হয়নি। এটা ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে না। আর কারাবাসের বিষয়টি আমার ডিপার্টমেন্ট দেখবে।
এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপপরিচালক আল-আমিন বলেন, আরজু খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬ এর (২) ও ২৭ এর (১) ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুস সালাম বলেন, আরজু খাতুনের অনুপস্থিতির বিষয়ে বিভাগীয় মামলা চলমান আছে। তথ্য গোপন করে ২২দিন কারাবাসের বিষয়টি কিছুদিন আগে আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি অধিদপ্তরও অবগত হয়েছে। আমরা আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দিয়ে তার মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়েছি। ওই চিঠির জবাব পেলে সেটি মহাপরিচালকের দপ্তরে পাঠিয়ে দিবো। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে মহাপরিচালক মহোদয়ই ব্যবস্থা নিবেন।
