২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান—বিএনপিতে উৎসব, রাজপথে অপেক্ষা
ঢাকা অফিস
প্রায় দেড় যুগের দীর্ঘ নির্বাসনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বদেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর তাঁর প্রত্যাবর্তন ঘিরে দলজুড়ে বইছে আবেগ আর প্রত্যাশার জোয়ার। প্রস্তুতি সভা, উঠান বৈঠক, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল—সবখানেই একটাই আলোচনা : প্রিয় নেতাকে কীভাবে বরণ করা হবে।
নেতাকর্মীরা বলছেন, ঘোষণা শোনার পর থেকেই বিএনপিতে যেন নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। সারাদেশের প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্মরণকালের সেরা সংবর্ধনা দিতে প্রস্তুতি চলছে দিন-রাত।
গুলশানে যৌথ সভা, মাঠে-ময়দানে ব্যস্ততা
দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতাকে স্বাগত জানাতে গত সোমবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভার নির্দেশনা পেয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলো এখন ব্যস্ত প্রস্তুতির শেষ ছোঁয়ায়।
অভ্যর্থনা কমিটি ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি
দলীয় সূত্র জানায়, প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে একাধিক বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং সদস্য সচিব সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এদিকে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম।
বিমানবন্দর থেকে হাসপাতাল—ভালবাসার ঢেউ
২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশাল জনসমাগমের মাধ্যমে তারেক রহমানকে বরণ করা হবে। বিমানবন্দর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতাল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে নেতাকর্মীরা জানাবেন ভালোবাসা ও অভ্যর্থনা। দেশে ফিরেই তিনি তাঁর মা খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন—এই খবরে আবেগ আরও ঘনীভূত।
এরপর গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাসায় উঠবেন তারেক রহমান; পাশেই খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় ও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও তাঁর বসার জন্য কক্ষ প্রস্তুত।
রাজপথে নামার অঙ্গীকার
মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশবাসী আমাদের নেতার অপেক্ষায় আছে। ২৫ ডিসেম্বর সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন নেতাকর্মীরা।”
সূত্র জানায়, দেশে ফিরেই নির্বাচনী মাঠে নামবেন তারেক রহমান। বিভাগীয় সমাবেশে সশরীরে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিয়ে তিনি নিজেই ঘোষণা দেন—
“গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে, ওয়ার্ডে-মহল্লায়, রাজপথে—জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকব।”
২৫ ডিসেম্বর তাই শুধু একটি প্রত্যাবর্তনের দিন নয়—এ দিন ঘিরে বিএনপির রাজনীতিতে লিখিত হতে যাচ্ছে আবেগ, প্রত্যাশা আর নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
