কল্যাণ ডেস্ক
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ‘সালানা জলসা’-কে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রবা ফটো
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ‘সালানা জলসা’-কে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আরিফুর রহমান নামে এক পথচারীর মৃত্যু এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। নিহত আরিফ পঞ্চগড় পৌরসভার মসজিদ পাড়া এলাকার ফরমান আলীর ছেলে।
এদিকে, বিক্ষোভকারীদের হামলায় বিদ্যুতের কয়েকটি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জেলা শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর পৌরসভা এলাকার কয়েকটি মসজিদ থেকে বিক্ষোভকারী মুসল্লিরা পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের চৌরঙ্গী মোড় এলাকায় জড়ো হন। সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এ সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে পৌরসভার আহামদনগর এলাকায় আহমদিয়াদের জলসা অভিমুখে রওনা দেন। এ সময় পুলিশ মিছিলটি আটকে দেয়। এর জেরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রায় তিন ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় আরিফুর রহমান গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, বিকালে বিক্ষোভকারীদের একাংশ আহমদিয়াদের ২৫-৩০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানা গেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও রংপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা আহমদিয়াদের সালানা জলসা বন্ধ করতে বলেছি। হামলাকারীদের শনাক্তে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
অন্য দিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ক্বারী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেই। কিন্তু আজ (শুক্রবার) আমাদের কোনো বিক্ষোভ মিছিল ছিল না। প্রশাসনের ফোন পেয়ে আমরা বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে নিয়ে আসি। কে বা কারা মিছিল করেছে জানি না। আমরা কোনো সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগ করিনি।’
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের সালানা জলসা আয়োজন কমিটির গণমাধ্যম কর্মকর্তা মাহমুদ আহমেদ সুমন বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরই সালানা জলসা করি। কারো কোনো সমস্যা করিনি। হঠাৎ কিছু বিপথগামী মানুষ আমাদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বাড়তি পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তারা আমাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
১ Comment
Pingback: ধার পরিশোধের চাপে নবজাতক চুরি, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার