নিজস্ব প্রতিবেদক
নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতের ৯ জন নেতাকর্মীকে ১০টি ককটেল বোমাসহ আটক করেছে পুলিশ। পৃথক স্থানে এই ঘটনার পর নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই নাজমুল হাচান ও কোতোয়ালি থানার এসআই শরীফ আলমামুন বাদী হয়ে মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেছে।
আটককৃতরা হলেন, যশোর শহরের বারান্দীপাড়া মেঠো পুকুর পাড় এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে বাবু, সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামের সুলতানের ছেলে সুমন, চুড়ামনকাটি গ্রামের উত্তারপাড়ার মোশারফ হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান, ছোট বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে রাসেল হোসেন, রূপদিয়ার আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে ইকরামুল ইসলাম, মৃত আবু জাফর খানের ছেলে লাইচ খান, জিরাট গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে সরোয়ার হোসেন, সাড়াপোলের ইসহাক আলী গাজীর ছেলে আলী কদর ও যোগীপাড়া গ্রামের আফসার আলী মোল্যার ছেলে জসিম উদ্দিন শেখ।
এসআই শরীফ আলমামুনের দায়ের করা মামলার পলাতক আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের শাহাজান আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম, ইসরাইল হোসেনের ছেলে জুম্মান হোসেন, চুড়ামনকাটি গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান বাচ্চু, বাগডাঙ্গা গ্রামের মৃত মোফাজ্জেল সরদারের ছেলে ফিরোজ হোসেন, ফুলবাড়ি গ্রামের ইসহাক শেলে একরামুল হোসেন, মধুপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আজাদ হোসেন, কেসমত নওয়াপাড়ার মফজেল বিশ্বাসের ছেলে সিরাজ উদ্দিন, এড়েন্দা গ্রামের বাবুলের ছেলে নুরুন্নবী, উপশহর বি-ব্লকের মৃত কাজী আব্দুল বারীর ছেলে ফিরোজ আহম্মেদ, ই-ব্লকের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে এসএম হাফিজ শরীফ, সাড়াপোলের ইসহাক গাজীর ছেলে মাসুদ হোসেন, চাঁচড়া গোলদারপাড়ার মৃত মৃত শামসুর রহমান গোলদারের ছেলে মেহেদী হাসান তোতা, বালিয়া ভেকুটিয়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে বাবলু, নরেন্দ্রপুর গ্রামের খন্দকারপাড়ার মৃত আব্দুর রউফের ছেলে খন্দকারের ছেলে ফারুকুজ্জামান রাসেল, বলরামপুরের ওলিয়ার রহমানের নাজমুল হোসেন ও হাটবিলা-জামতলার নুরুল হকের ছেলে আফজাল হোসেন।
অপরদিকে নরেন্দ্রপুর ক্যাম্পের এসআই নাজমুল হাচানের মামলার আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার নালিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে মতিয়ার রহমান, আমির আলীর ছেলে মনির হোসেন, দোগাছিয়ার শামসুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন, হাসিমপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে শওকত হোসেন, মনোহরপুরের আমির উদ্দিনের ছেলে রাজু শেখ, বালিয়াডাঙ্গার মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুদ, চান্দুটিয়ার গৌরপদ বিশ্বাসের ছেলে বিদ্যুৎ বিশ্বাস, উপশহর ৩ নম্বর সেক্টরের মৃত মোসাদ্দি সরদারের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন, উপশহর বি-ব্লকের মৃত জামাল খানের ছেলে জালাল চৌধুরী জনি, ভাতুড়িয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত আহম্মদ আলী গাজীর ছেলে আতাউর রহমান, সুজলপুরের মি››তঁ মিয়ার ছেলে স্বপন ও সোনা মিয়ার ছেলে শামসুল আলম।
বাদী এসআই শরীফ আলমামুন মামলায় জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার সকালে টহল ডিউটি করাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে যশোর শহরের নাজির শংকরপুর চাতালের মোড় এলাকার ইয়াকুব আলীর আবাসন প্রকল্পের সামনে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজে বাধাগ্রস্থ করা এবং সরকারি বেসরকারি অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বোমা মেরে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এসময় তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ সেখানে গেলে পোষাক পরিহিত পুলিশ দেখে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পাশাপাশি কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরই মধ্যে ধাওয়া করে বাবু, সুমন, মেহেদী হাসান ও রাসেলকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চারটি ককটেল বোমা, তিনটি বাঁশের লাঠি ও ৯টি জর্দ্দার কৌটা। এরপরে আটককৃতদের কাছ থেকে তাদের সহযোগি পলাতক আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়। এই ঘটনায় এদিনই তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে নরেন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের এসআই নাজমুল হাচানের মামলায় জানা গেছে, বুধবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন হামলা ভাংচুরের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এসময় সেখানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় সঙ্গীয় ফোর্সসহ ইকরামুল সরদার, লাইচ খান, সরোয়ার হোসেন, আলী কদর ও জসিম উদ্দিনকে সেখান থেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছয়টি ককটেল বোমা, লাঠি, ইটের টুকরা ও কয়েক জোড়া স্যান্ডেল। এই ঘটনায় এদিনই তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।