বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি
বিয়ের খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকায় বই বিতরণের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে বাগেরহাটের এক নবদম্পতি। জেলার চিতলমারী উপজেলার মাধন-সাথী দম্পতি বৌভাতের অনুষ্ঠান সীমিত করে নিজেদের স্কুল-কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীদের হাতে বিভিন্ন ধরনের পাঁচ শতাধিক বই তুলে দেয়।
১৫ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের এক মাস পর পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কলেজ কালিদাস বড়াল স্মৃতি (ডিগ্রী) মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন লেখকের পাঁচ শতাধিক বই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার রায়, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চিতলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
দম্পতির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর চিতলমারী সদর ইউনিয়নের কালশিরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল ব্রাহ্মণের ছেলে মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণের সাথে রায়গ্রামের অমল ঢালীর মেয়ে সাথী ঢালীর বিয়ে হয়। পরদিন রেওয়াজ অনুযায়ী বরের বাড়িতে হয় বৌভাতের আয়োজন। তবে বর মাধন চন্দ্রের আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল বিয়ের পর তার ও তার স্ত্রীর স্কুল-কলেজের বর্তমান সব শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেয়ার। মাধব বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) শাখায় কর্মরত।
মাধব চন্দ্র ব্রাহ্মণ বলেন, ‘বিয়ের পর সবাই তো বৌভাতে দাওয়াত করে খাওয়ার আয়োজন করে। আমার ইচ্ছে ছিল, খাবার-দাবার আয়োজনে অনেক বেশি খরচ না করে, যেসব স্কুলে-কলেজে পড়ছি, আমার স্ত্রী যেসব জায়গায় পড়ছে-সেখানের সব বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে একটি করে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বই উপহার দেব; সেই চিন্তা থেকে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করি। বৃহস্পতিবার বই দেয়া শুরু করেছি। এ কলেজে আমরা দুজনে পড়েছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের পড়ালেখা করা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উপহার দিতে চাই।
বই উপহার দেয়ার বিষয়ে কালিদাস বড়াল স্মৃতি (ডিগ্রী) মহাবিদ্যালয়ে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার রায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বই পড়া উৎসাহ ও আলোকিত মানুষ হতে উদ্বুদ্ধ করতে এই উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মাধবসহ তাদের বন্ধুসহ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে প্রতি বছর নবীন বরণে শিক্ষার্থীদের গাছের চারা উপহার দেয়।’