নিজস্ব প্রতিবেদক, মনিরামপুর
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের দুঃশাসনামলে জনগণের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি। এ কারণে তারা ক্ষমতায় থেকে জনগণের কল্যাণ করেনি। উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে জনগণের জন্য কাজ না করে লুটপাট করে নিজেদের পকেট ভরেছেন।
যশোরের মনিরামপুরের দুঃখ ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে ১০ দফা দাবি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির ডাকা লংমার্চ ও গণজমায়েত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে ভবদহের মানুষের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। কিন্তু এখানকার মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায়নি। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভবদহ নিয়ে আর কোনো লুটপাট ঘটবে না। যদি কেউ করার চেষ্টা করে বিএনপি তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করবে।
তিনি বলেন, আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে কথা বলেছি। তিনি ভবদহের মানুষের কষ্টের কথা শুনেছেন। দেশে ফিরে অনুকূল সময়ে তিনি সরেজমিন ভবদহ ঘুরে এখানকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
রোববার বিকেলে ভবদহপাড়ের কপালিয়া রাজবংশীপাড়া মন্দির মাঠে মনিরামপুর থানা বিএনপি গণজমায়েতের আয়োজন করে। এর আগে দুপুর থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী লংমার্চে যোগ দিয়ে পায়ে হেঁটে মনিরামপুর বাজার থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের গণজমায়েতে সমবেত হয়েছেন।
মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার ফারুক মিন্টুর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ মুছা, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান মিন্টু প্রমুখ।
যশোর-খুলনার দুঃখ হিসেবে পরিচিত ভবদহ অঞ্চলের অন্তত চার লক্ষাধিক মানুষ বহু বছর ধরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে মানবতার জীবন যাপন করছেন। যশোরের মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদের মোহনা ভবদহ। স্রোত না থাকায় পলি পড়ে নদগুলো নাব্যতা হারিয়েছে। নদীর তলদেশ উচু ও ভবদহ সংলগ্ন বিলের তলদেশ নীচু হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে কয়েকমাস ধরে পানিবন্দী হয়ে পড়ে ভবদহ পাড়ের লাখ লাখ মানুষ। জলাবদ্ধতা কেড়ে নেয় এখানকার মানুষের মাথাগোঁজার জায়গাটুকু, পানিবন্দী হয়ে পড়ে রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়। প্লাবিত হয় কৃষি জমি, মাছের ঘের। পানির কাছে হেরে বহু মানুষ বসতঘর ছেড়ে মহাসড়কের ধারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।