প্রতিবাদে স্থানীয়দের সড়ক অবরোধ
মণিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ১০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এক অটোরাইস মিল মালিককে মারপিট ও প্রায় ৪ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার সকালে মণিরামপুর পৌর এলাকার বাঁধাঘাট ব্রিজ সংলগ্ন ব্যাপারী অটোরাইস মিলে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় মিলের শ্রমিকসহ গ্রামবাসী যুব-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তারা পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সেখানে চাঁদাবাজদের ফেলে রেখে যাওয়া একটি আ্যাপাচি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মিল শ্রমিক ও কয়েকশ’ গ্রামবাসী দুই ঘন্টাব্যাপী যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি চালু হওয়া পৌর এলাকার বাঁধাঘাট এলাকায় ব্যাপারী অটোরাইস মিলে মালিক আব্দুস সালামের কাছে ধরে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। কিন্তু তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানাালে ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে মণিরামপুর পৌর যুবলীগের সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর, যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন ওরফে ফাঁড়া রুবেল, অমিত দাস, রনিসহ ১০ জনের একটি সশস্ত্র দল ওই মিলে গিয়ে মালিক আব্দুস সালামের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় দিতে না চাইলে মিল মালিক আব্দুস সালাম, তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রনি ও জামাই মোস্তফাকে মারপিট করে। এ সময় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের ৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। খবর ছড়িয়ে পড়লে মিল শ্রমিক ও কয়েকশ’ গ্রামবাসী যুবলীগ-ছাত্রলীগের ওই নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। কিছুক্ষণ পর থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করেননি এসআই আব্দুর রাজ্জাক।
মিল মালিক আব্দুস সালাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার অটোরাইস মিলটি এ বছর চালুর পর থেকেই তারা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু না দেওয়ায় তাকেসহ তার ছেলে ও জামাইকে মারপিট করে টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পুলিশের উপস্থিতিতে চাঁদাবাজরা পালিয়ে যায়। এসময় উপস্থিত এসআই আব্দুর রাজ্জাককে চাঁদাবাজদের কাছে থাকা পিস্তল দেখিয়ে দিলেও তিনি তাদের ধরেননি বলে অভিযোগ করেন। বরং তাদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।
পালিয়ে যাবার সময় ফেলে রেখে যাওয়া একটি আ্যাপচি মোটরসাইকেল পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে নিয়ে যায়।
মিল মালিকের ছেলে রনি বলেন, তিনি ৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা নিয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য যপবিস-২ (যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২) তে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নূর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিয়োগ দেয়নি। দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি অবরুদ্ধ নেতা-কর্মীদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার বিষয়টি এড়িয়ে যান।