শিব্বির আহমেদ, মোরেলগঞ্জ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রভাবশালীরা ভেরিবাঁধ কেটে পাইপ ও কাঠের বক্স বসিয়ে মৎস্য ঘেরে লবণ পানি তোলার কারণে কমপক্ষে ১১৫ একর (সাড়ে ৩ শ’ বিঘা) জমির উচ্চফলনশীল হাইব্রিড হিরা-২ জাতের ধানক্ষেত পুড়ে গেছে। ফলে চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ গ্রামের ৫৫ জন কৃষক ও জমির মালিকেরা। এ ঘটনার বিচার চেয়ে সোমবার বেলা ১২টার দিকে পুড়ে যাওয়া ধানক্ষেতের পাশে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
লবণ পানির প্রভাবে পুড়ে যাওয়া সাড়ে ৩ শত বিঘা জমিতে এ বছর ২০ টন ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু দরিদ্র কৃষকদের সে স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। ঘের মালিকরা আর মাত্র ২০ দিন পরে ঘেরে পানি তুললে কপাল পুড়তো না কৃষক ও জমির মালিকদের।
কৃষক লোকমান তালুকদার, সাইফুল তালুকদার, শুনিল ঋষি, মাদব ডাকুয়া, আলামিন তালুকদার, আজিজ তালুকদার, আলী আকবর তালুকদার বলেন, আমন ধান তোলার পরে প্রতিবিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ করে হিরা-২ জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। যার ফলন হযে থাকে প্রতিবিঘায় ৪০-৪৫ মণ। আর মাত্র ১৫-২০ দিন পরেই ধান ঘরে তোলা যেত। কিন্তু লবণ পানিতে পুড়ে সে স্বপ্ন ছাই হয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে ফসল করেছি এখন এ টাকা কিভাবে পরিশোধ করবো।
পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার বলেন, দেবরাজ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশতাধিক কৃষক বিষয়টি তাকে অবহিত করলে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত আকারে পাঠানো হয়েছে।
এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, হতদরিদ্র কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তারা দেনা হয়ে গেছেন। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘেরে লবণ পানি তুলে অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক দেবরাজ গ্রামের লোকমান তালুকদার স্থানীয় ঘের ব্যবসায়ী ফরিদ শেখ, সাহেব আলী শেখ, নজরুল ও রাসেল শেখের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম তারেক সুলতান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন তহশীলদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।