নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে অন্তত ১৭ চাকরিপ্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক আনিছুর রহমানকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে আগামি ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে প্রক্টর ড. হাসান মোহাম্মদ আল ইমরানকে। অন্যান্য সদস্যরা হলেন ডিন’স কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ড. মেহেদী হাসান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আমিনুল হক।
সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্য গত বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। অভিযোগকারী চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, পরীক্ষা দিতে গেলে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাদের নিয়ে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে প্রার্থীদের মধ্যে ১৭ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্র হলে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সংগ্রহ করতে গেলে সেটিও ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
ওই দিন রাতেই আরাফাত হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী চাকরিপ্রার্থী বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানাতে মামলা করেন। মামলার পরে ঘটনার দিন গভীর রাত ২টার দিকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলে অভিযান চালাতে যায়। কিন্তু হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ভেতরে সমবেত হয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন। এই ঘটনায় এখনো পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি বলে জানিয়েছে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবারের অপহরণের ঘটনায় রিজেন্ট বোর্ডের সভায় আমি বিষয়টি অবহিত করি। রিজেন্ট বোর্ড অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডের সভায় তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করবেন। এছাড়া চাকরি প্রার্থীদের অপহরণ ও সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করবেন বলে জানান তিনি।