নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) রং করা কর্কশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মেরে কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আরেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ যুথি-বীথি হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পার হলেও কানে শুনতে না পেয়ে ভুক্তভোগী সুমন কুমার মন্ডল বধির হওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছেন। ভুক্তভোগী সুমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাইমেট এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএম) বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত আকিব ইবনে সাইদ অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার্যাক্ট ক্লাব ও ফটোগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় গেইট সংলগ্ন একটি জায়গায় ফটো এক্সিবিশন ‘আরণ্যক’ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন ৭ মার্চ সন্ধ্যায় রং করা কর্কশিট কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকস্থ যুথি-বীথি হোটেলের সামনে সুমন কুমার মন্ডল নামের এক শিক্ষার্থীকে সজোরে থাপ্পড় মারেন আকিব ইবনে সাঈদ। এসময় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এরপর তাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি হঠাৎ করে অনেক জোরে চড় মারার শব্দ শুনতে পাই। পরে আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আকিবসহ কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে আর একটা ছেলে মাটিতে পড়ে গেছে। পরে বুঝতে পারি ছেলেটাকে থাপ্পড় মারার কারণে মাটিতে পড়ে গেছে।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী সুমন কুমার মন্ডল বলেন, রং করা কিছু পুরোনো কর্কশিট নিজের রুমে সাজিয়ে রাখবো তাই নিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় যুথি বীথী হোটেলের সামনে আমাকে ২ জন আপু আটকায়, সেখানে আকিব ভাইও ছিল। উনি কোনো কথা না শুনে কেনো ওগুলো নিয়ে যাচ্ছি বলেই আমার কানে বরাবর মুখে জোরে থাপ্পড় মারে। সাথে সাথে আমি অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তখন তারা আমাকে যশোর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি তিনি আমার কথা শুনেছেন এবং লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেছেন।
ঘটনার বিষয়ে ফোনকলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদের সাথে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. আলম হোসেন বলেন, যদি আমাদের কাছে কোন ক্লাবের দায়িত্বরত কারও বিরুদ্ধে যদি এমন কোন অপ্রীতিকর কা-ের লিখিত কোন অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব ও তার ক্লাবের সাথে সকল কর্মকা- বন্ধ করে দিব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. হাফিজ উদ্দিন সার্বিক বিষয়ে বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি শুনেছি। গতকাল রাতে সিডিএম বিভাগের ছাত্র সুমন আমাকে ফোন দিয়ে সবকিছু জানিয়েছে। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি, অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।