নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে আবাসিক হলের কক্ষে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়ে যাচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খান মাইদুল ইসলাম বুধবার জানান, ‘মামলার এজাহারভুক্ত দুইজন আসামি পলাতক রয়েছে। তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তারা তাদের অবস্থান দ্রুত পরিবর্তন করছে। আশা করছি, দ্রুতই আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পারবো।’ এদিকে নির্যাতনের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন তিনদিনেও পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি। শ্রেণীকক্ষেও তিনি ফিরতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ফিরেছি। তবে সুস্থ হতে পারিনি। পুরোপুরি শয্যাশায়ী অবস্থায় আছি। মাথা ও পিঠে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। ক্লাস চললেও আমি ক্লাসে ফিরতে পারছি না। অথচ নির্যাতনকারীদের কেউ এখনো গ্রেপ্তার হলো না।
আরও পড়ুন:যশোর ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে আসাদ হল ভাংচুরের অভিযোগ
এটা ভেবেই আরো কষ্ট পাচ্ছি। অবিলম্বে নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ গত রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইসমাইল হোসেন তার বিভাগ থেকে ডেকে আবাসিক হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে পাঁচ ঘন্টা ধরে ছাত্রলীগের দুই কর্মী শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমান নির্যাতন করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বষর্রে শিক্ষার্থী। অচেতন অবস্থায় ইসমাইককে উদ্ধার করে রাত ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় পরদিন সোমবার রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান জাহিদ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সালমান এম রহমান ও শোয়েব আলীকে আসামি করা হয়েছে। যদিও মামলা দায়েরের আগেই অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী সালমান ও শোয়েব এনএফটি বিভাগের ইসমাইল হোসেনের কাছে বিভিন্ন সময়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার ইসমাইলকে বিভাগ থেকে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের পঞ্চম তলার ৫২৮ নম্বর কক্ষে নিয়ে পূর্বের দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে তাকে খুন করার হুমকি দিতে থাকে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইসমাইলকে পাঁচ ঘন্টা কক্ষের ভিতরে আটকে রেখে বেল্ট, লোহার রড ও পাইপ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট ও জখম করে।
আরও পড়ুন:যবিপ্রবিতে চাঁদার দাবিতে হলকক্ষে ছাত্রকে ৫ ঘন্টা আটকে নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
