নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্টজনদের সাথে বিশেষ মতবিনিময় সভা করেছে প্রশাসন। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ব্যতীত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্ভয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানানো হয়। একই সাথে কোন অশান্তি না করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবিরুল হক সাবু, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক রুহুল কুদ্দুস, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মর্তুজা ছোট, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, হেফাজত ইসলাম যশোরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসিরুল্লাহ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খানসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা বিশৃঙ্খলা সংঘাত ঠেকাতে হবে। সরকার পতনের পর যশোরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষা প্রদান করা হয়েছে। যে দুই একটি ঘটনা ঘটেছে তা আওয়ামী লীগের লোকজন সংঘটিত করেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক শিক্ষা সহাবস্থান ও সহমর্মিতার। এজন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। একইসাথে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে মাঠে নামার আহ্বান জানান এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, যশোরের মানুষ ও আন্দোলনকারীদের উদারতা ও সহনশীলতার কারণে পুলিশের সঙ্গে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যেসব পুলিশ সদস্য জনগণের উপরে অন্যায় অত্যাচার করেছেন সেইসব নিপীড়ক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ সমাজের অংশ। তাদেরকে ক্ষমা করে সমাজ গঠনে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। আগামীতে বৈষম্যের কোন স্থান হবে না।
তিনি আরও বলেন, একটি কুচক্রি মহল অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অপপ্রচার শুরু করেছে। গত দুই দিনে ৬১টি ঘটনার খবর পেয়েছি যার ৫৭টি ভুয়া। যে ৪টি ঘটনা ঘটেছে তা আমলে নেয়ার মতো না। তাছাড়া বিএনপি নেতারা সকল ক্ষেত্রে পুলিশকে সহযোগিতা করছে।
সভায় জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন, মাইকিং, কমিউনিটি পেট্রোলিং ও সেনা সদস্যদের সাথে পুলিশকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত হয়। একইসাথে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় সম্প্রীতি র্যালি বের করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন যশোর অঞ্চলের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ মীর মোস্তফা কামাল, আনসার ও ভিডিপি জেলা কমাড্যান্ট সঞ্জয় কুমার সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট, জাতীয় পার্টি যশোরের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ নেতা তসলিম-উর রহমান, বাম গণতান্ত্রিক জোটের যশোর জেলা নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু, সিপিবি যশোর জেলা শাখার সভাপতি আবুল হোসেন, শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান মজনু প্রমুখ।