সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
আমেরিকার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতার ক্যাম্পাসের সমাজবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ড. হাসান মাহমুদ তার লেখা ‘বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন’ বইটির ওপর আলোচনা সভায় বলেছেন, ১৮৭১ সালে একটি ‘সেনসাস’ (জনগণনা) প্রকাশের পর ১৮৮১ সালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার নিজের সম্পাাদিত পত্রিকায় দুইটি ‘আর্টিকেল’ লেখেন। ওই লেখাতে তিনি দেখাতে চেষ্টা করলেন; পূর্ববাঙলার গ্রাম-বাঙলায় এতো সংখ্যক মুসলমান কীভাবে আসলো। আর এইভাবে তিনি জাতির আলাপ শুরু করলেন। সেই আলাপে তিনি উপস্থাপন করলেন; জাতি আইডিয়াটা হলো বংশ পরম্পরার। তিনি দেখালেন, জাতির পরিচয় জন্মগত। তার আলোচনায় ফোকাসটা ছিল ‘আর্য-রক্ত’। তিনি বাঙালি আর্য রক্তের উত্তরাধিকার বলে মনে করতেন। বাঙালিকে চার ধরনের উল্লেখ করেছেন বঙ্কিমচন্দ্রÑ ‘আর্য, অনার্য, অনানার্য ও মুসলমান।
শনিবার বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব যশোরের দোতলায় গোলাম মাজেদ অডিটোরিয়ামে ‘বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন’ বইটি নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে যশোর স্টাডি সার্কেল। এতে ‘লেখকের উপস্থাপনা’ পর্বের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, বাঙালি মুসলমানের ইতিহাস নিয়ে আলোচনায় খুবই সিলেক্টিভ কথাবার্তা হয়। যেমন: বখতিয়ার খলজির আগমন নিয়ে আলাপ-আলোচনা হলেও তার শাসন যে শুধুমাত্র উত্তর ও পশ্চিম দিনাজপুর এবং দেবপুরে সীমাবদ্ধ ছিল, তার বাইরে যে ছিল না সেটি নিয়ে আলোচনা হয় না। মোঘলরা খাজনা নীতির কারণে যে, চাষাবাদের সম্প্রসারণ করেছিল তারও আলোচনা হয় না। ফলে পূর্ববঙ্গের চাষাভূষা মানুষেরসহ মুসলমানদের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস আমরা পাইনা। যেটুকু পাই সেটি খন্ডিত।
আলোচনা পর্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অ্যাডভোকেট কাজী মুনিরুল হুদা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ফকির শওকত এবং লেখক ও গবেষক বেনজীন খান। সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠান আয়োজনের আহ্বায়ক ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব মুর্শিদ। সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সাংবাদিক সালমান হাসান রাজিব।
আলোচনা সভা শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। এসময় ‘বাঙালি মুসলমান প্রশ্ন’ বইটির লেখক ড. হাসান মাহমুদ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।