রমজানে তাহাজ্জুদের গুরুত্ব অপরিসীম। আরবি তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ নিদ্রা ত্যাগ করা। যেহেতু রাতের আরামের ঘুম ত্যাগ করে এই বিশেষ নফল নামাজ আদায় করা হয়, তাই একে তাহাজ্জুদের নামাজ বলা হয়। এই নামাজের অপর নাম কিয়ামুল-লাইল বা রাতের নামাজ। রমজানে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করার ফজিলত অনেক। যেহেতু রোজাদারগণ সাহ্রি খাওয়ার জন্য শেষ রাতে জাগেন, তাই একটু আগে জাগলে এই ফজিলতপূর্ণ নামাজ আদায় করা যায়।
তাহাজ্জুদ নামাজের অশেষ ফজিলতের কথা কুরআন-হাদিসে বিবৃত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনার রব জানেন, আপনি সালাতে দাঁড়ান কখনো রাতের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ, কখনো অর্ধাংশ এবং কখনো এক-তৃতীয়াংশ সময়ে এবং আপনার সঙ্গে একটি দলও দাঁড়ায়, যারা আপনার সঙ্গে আছে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল: ২০)
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ুন। এটা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন মাকামে মাহমুদ তথা প্রশংসিত স্থানে।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ৭৯)
মহানবী (সা.) বলেন, ‘ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ রাতের নামাজ তথা তাহাজ্জুদ।’ (মুসলিম) আরেক হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা রাতের নামাজ দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো। এটা ছিল তোমাদের পূর্ববর্তী সৎ লোকজনের অভ্যাস। তোমাদের রবের নৈকট্য অর্জনের উপায়। পাপমোচনের অপূর্ব মাধ্যম। আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বারণকারী। তা ছাড়া দেহকে রোগমুক্ত রাখার ক্ষেত্রেও রয়েছে এর ভূমিকা।’ (মুসনাদে আহমদ)
রমজানে মহানবী (সা.) নিজেও রাতের শেষ প্রহরে জাগতেন এবং পরিবারের সবাইকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে জাগিয়ে দিতেন। আমাদেরও রমজানে সাহ্রি খাওয়ার আগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত।
আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক
১ Comment
Pingback: যেসব কারণে রোজার কাজা-কাফফারা দুটোই ওয়াজিব