বাগআঁচড়া প্রতিনিধি
মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও সময় মতো বিল না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোরের বাগআঁচড়া অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকরা।
এ ঘটনায় যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর বাগআঁচড়া সাব জোনাল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, প্রতি মাসে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং না নেওয়া ও সময়মত বিদ্যুৎ বিল বাড়িতে পৌঁছে না দেওয়া তাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। কয়েক মাস ধরে চলছে এ অবস্থা। অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বাগআঁচড়ার জামতলা এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ তারিখ প্রতিমাসের ২৬ তারিখ। অথচ ২৪ মে শুক্রবার পর্যন্ত এলাকার কেউই মে মাসের বিল হাতে পায়নি।
লেছি ইয়াসমিন নামে এক গ্রাহক বলেন, মিটার রিডাররা প্রতিমাসে না এসে মাঝে মাঝে আসে। সব সময় তারা অনুমান নির্ভর বিল করে থাকে। এতে প্রকৃত বিল আমরা দিতে পারি না। বিশেষ বিশেষ সময় মিটার দেখে রিডিং নিয়ে আমাদের উপর বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে দেয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মিটার রিডাররা বাসায় বাসায় গিয়ে মিটারের বর্তমান রিডিং নিয়ে আসেন। সেই রিডিং থেকে আগের মাসের প্রাপ্ত রিডিং বাদ দিলেই এই মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসাব পাওয়া যায়। সেগুলো বিভিন্ন স্ল্যাব অনুযায়ী হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল করা হয়।
সামটা গ্রামের সেলিম রেজা বলেন, এদের পলিসিটা হলো এরা দু-চার মাস প্রকৃত বিলের চাইতে ইউনিট কম লেখে। বিশেষ করে জুন ও ডিসেম্বর মাসে প্রকৃত ইউনিট দিয়ে বিল করে তাতে এদের লাভ হচ্ছে বেশি। ইউনিটে রেট বেশি পাওয়া যায়। আমরা জনগণ আমাদের কিছু করার থাকে না। এ যেনো শরতবাবুর শুভঙ্করের ফাঁকি।
জামতলা জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান বলেন, গত মাসের (এপ্রিল) মসজিদের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ওরা দেয়নি। আজ ২৪ মে। মে মাসের বিল দেওয়ার শেষ তারিখ ২৬ মে অথচ মে মাসের বিলের কাগজও পায়নি। দায় তাদের, অথচ জরিমানা দিতে হবে আমাদের। একই কথা বলেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, আমিও গত মাসের বিলের কাগজ পাইনি। মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দেখে বিল দিলাম।
বাগআঁচড়ার গোলাম রব্বানী বলেন, ওরা আমার মিটারের রিডিং না দেখে বিল করেছে ১২ হাজার ৭৩৮ টাকা। এ ব্যাপারে অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলছে, ‘তোমার বাড়ি এসি চলে তাই অতিরিক্ত বিল এসেছে।’ অথচ আমার বাড়ি কোনো এসি নেই। বুঝিয়েও কোনো লাভ হয়নি কারণ ওদের রিডিং বইতে লেখা আছে আমার বাসায় এসি চলে।
টেংরা গ্রামের শামীম আহমেদ বলেন, গত মাসে এক দিন আগে বিলের কাগজ পাইছি। বিদ্যুৎ অফিসের লোকেদের গ্রামে কিছু খাসচামচা (ইলেকট্রিশিয়ান)আছে যাদের কাছে বিদ্যুৎ বিলের কপি দিয়ে যায়। এরাই মূলত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেয়। এ কারণেই সময় মতো গ্রাহকরা বিল হাতে পায় না।
বাগআঁচড়া সাব-জোনাল অফিসের এজিএম গাজী সোহরাব হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিল রিডিং যারা করেন তারা বাড়ি বাড়ি গিয়েই তো বিল রিডিং করেন। তারা কেনো অফিসে বসে বিল রিডিং করবে? এটা কোনো সমস্যা না, দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের নতুন বিল রিডার এসেছে অনেক সময় বাড়ি খুঁজে পায়না এজন্য হয়তো দেরি হয়ে গেছে। তবে সব কিছু দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।