বিশেষ প্রতিনিধি
দেশের রাজনীতির উত্তাল ঢেউয়ের মাঝেও এক শান্ত, নিরিবিলি উপস্থিতি যেন নতুন করে ভাবাচ্ছে। ডা. জুবাইদা রহমান—যিনি বর্তমানে শাশুড়ির চিকিৎসা তদারকি করে থাকলেও, তার নীরব পদচারণা রাজনৈতিক অঙ্গনে যেন গুঞ্জনের কারণ হয়ে উঠেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ এই নারী শুধুমাত্র পারিবারিক দায়িত্ব পালন করছেন তা নয়, বরং তার শান্ত, নিবিড়, আর গূঢ় রাজনৈতিক শক্তি আজ নতুন প্রেক্ষাপটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। নিজের ব্যক্তিত্ব ও পারিবারিক ঐতিহ্যের ভেতর দিয়ে তিনি যেন নিঃশব্দে এক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় রচনা করছেন।
২০০৮ সালে দেশের রাজনীতির সংকটে লন্ডনে পাড়ি দেওয়ার পর, দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকেও জুবাইদা কখনো মুখ খুলেননি রাজনীতির বিষয়ে, বরং পরিবার ও পেশায় মনোনিবেশ করেছিলেন। কিন্তু আজ, যখন খালেদা জিয়ার শারীরিক সংকটের কারণে দেশে ফিরে এসেছেন, তার নিঃশব্দ পদক্ষেপগুলো রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে এক গভীর বার্তা।
তাঁর পেশাগত যোগ্যতা, চিকিৎসাবিদ্যায় অসাধারণ সাফল্য এবং উচ্চশিক্ষার মধ্য দিয়ে তিনি শুধুমাত্র একজন রাজনীতির স্ত্রী নন, বরং স্বতন্ত্র মেধাবী নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। পারিবারিক ঐতিহ্যের সাথে তাঁর মেধার সমন্বয় তাকে তরুণ প্রজন্মের কাছে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডা. জুবাইদার নীরবতা, ব্যক্তিত্বের মাধুর্য এবং পরিবারকে এগিয়ে রাখার দায়িত্ববোধ বিএনপির জন্য এক অনন্য সম্পদ। রাজনৈতিক বচসার উষ্মা, দলের বিতর্কের তাপের বাইরে থেকে, তিনি দলের ‘ক্লিন ইমেজ’ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছেন।
বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক ক্ষেত্রে নেতাদের পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা আলোচিত হলেও, বাংলাদেশের মতো সংসদীয় গণতন্ত্রে এতোটা আগ্রহ বিরল। কিন্তু জুবাইদার ব্যক্তিত্ব ও অবস্থান যেন সেই প্রথা ভেঙে দিয়েছে।
একই সঙ্গে তার নিঃশব্দ পদচারণার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, রাজনীতিতে কেবল শব্দ নয়, ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা ও আভিজাত্যেরও গভীর প্রভাব থাকে। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই নীরব শক্তির গতি কতদূর পৌঁছাবে, সেটাই এখন অপেক্ষার বিষয়।
সাধারণ মানুষের মাঝে এই ‘শাশুড়ির সেবা’ আর ‘পারিবারিক দায়বদ্ধতা’র ফ্রেমের বাইরে গিয়ে, জুবাইদা এক নতুন রাজনৈতিক রূপকার হিসেবে ধরা দিচ্ছেন, যিনি দেশের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক মঞ্চে নীরবভাবে হলেও এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করছেন।
