কল্যাণ ডেস্ক : বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার প্রত্যয়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে যুক্ত হয়ে তাদের আত্মবিশ্বাসী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী ও খুনিরা সবসময় তৎপর আছে, তৎপর থাকবে। তাদের ষড়যন্ত্র চলতে থাকবে, কিন্তু ওই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।
“আমাদের দেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আর এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। কাজেই একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলবেন।”
সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়-বাংলাদেশের এ পররাষ্ট্র নীতির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশেষ করে মালদ্বীপের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এখানে যাতে আমরা রপ্তানি করতে পারি, ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে পারি সেই বিষয়টাও আমরা দেখছি।”
মালদ্বীপ প্রবাসীরা সমস্যার কথা সফররত বাংলাদেশের মন্ত্রীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারে নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জনগণের চাপ কমাতে কৃষি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে ভর্তুকি দিচ্ছি।
“বাজেটের ৫৩ হাজার কোটি টাকাই আমরা ভর্তুকি দিয়ে থাকি, আমার দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ সবাই যেন ভালো থাকে।”
বিনিয়োগের জন্য দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে শিল্প হবে, মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
আওয়ামী লীগ সরকার দেশেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিদেশে দৌড়াতে হবে না। .. সেই ব্যবস্থাই আমি নিচ্ছি।”
শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট তাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতির পিতাকে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এরপর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের সেই ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমি নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে চলে এসেছিলাম। কারণ, আমার একটা আত্মবিশ্বাস ছিল।”
বাংলাদেশের ফেরার পর ‘বারবার হত্যার চেষ্টার শিকার’ হওয়ার কথা তুলে তিনি বলেন, “কতবার বোমা, গ্রেনেড, গুলি কি না হয়েছে! সবই হজম করেছি। কাজেই সব কিছুই মোকাবেলা করেছি।“
উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কাজেই আমি এখন যেটা পরিকল্পনা করে দিয়ে যাচ্ছি ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে।”
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা সব সময় মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, উন্নত জীবন নিশ্চিতের উপর গুরুত্ব দিতেন।
“আমার সেটাই লক্ষ্য এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার ব্যবস্থা করে একটা সুন্দর জীবন দেওয়া। এইটুকু করতে পারলেই আমি মনে করি যে ষড়যন্ত্রকারীরা, যে খুনিরা আমার বাবাকে হত্যা করেছে, বাংলাদেশের মানুষকে পদদলিত করে রাখার জন্য তাদের জন্য উপযুক্ত জবাব আমি দিতে পারব।”