নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছায় সম্পদ নিয়ে ছেলেদের মধ্যে বিরোধে হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু তা নির্ণয়ে হায়দার আলী (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ কবর থেকে প্রায় তিন মাস পর উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে চৌগাছা উপজেলার মাকাপুর গ্রামে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহটি উত্তোলন করে তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
লাশ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে ওই বৃদ্ধের স্বজনসহ স্থানীয়রা ভিড় জমায়। তাদের দাবি, সম্পদ নিয়ে বিরোধের কারণে লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার ভাইকে হত্যা মামলায় জড়াতে বাবার লাশ উত্তোলন করিয়েছেন অন্য সন্তানরা ও তাদের মা।
গত বছরের ৯ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চৌগাছা উপজেলার মাকাপুর গ্রামের হায়দার আলী। স্ত্রী, সন্তান আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতেই পরদিন তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তার সন্তানরা মাকে দিয়ে বাবাকে হত্যার অভিযোগে আপন ছোট ভাই ব্যারিস্টার এম মর্তুজার বিরুদ্ধে মামলা করান। ওই মামলায় আদালত হায়দার আলীর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে সিআইডিকে দায়িত্ব দেন। এরপর সিআইডি হায়দার আলীর মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেন। আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাকাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে হায়দার আলীর মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
এদিকে, লাশ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে ওই বৃদ্ধের স্বজনসহ স্থানীয়রা ভিড় জমায়। তাদের দাবি সম্পদ নিয়ে বিরোধের কারণে লন্ডনপ্রবাসী ব্যারিস্টার ভাইকে হত্যা মামলায় জড়াতে বাবার লাশ উত্তোলন করিয়েছেন অন্য সন্তানরা। তারা এমন ঘটনার নিন্দা জানান।
নিহতের প্রতিবেশী মিজানুর রহমান বলেন, সম্পদের কারণে নিয়ত এর স্ত্রী ও তার সন্তানেরা আরেক সন্তান যিনি প্রবাসে থাকেন তাকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। হায়দার আলী জীবিত থাকতেও তারা নির্যাতন করেছে, মৃত্যুর পরেও একই কাজ করছেন। যে ছেলেটা বাবার জন্য অনেক কিছু করেছে, তারা তাকেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে।
নিহতের স্বজন শহিদুল ইসলাম বলেন, হায়দার আলী স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুবরণ করেছেন। অথচ সম্পদের কারণে সন্তানরা তাদের প্রবাসী ভাইকে ফাঁসাতে মাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। আমরা এমন ঘটনা কখনোই দেখিনি বা শুনিনি।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত খান সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি এসেছি। সিআইডির উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোরে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ ফের দাফন করা হবে।
তবে, এ বিষয়ে কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি মামলার বাদি হায়দার আলীর স্ত্রী ও সন্তানরা।