সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরায় ১৫টি মামলায় দিশেহারা পাঁচ সহোদর ও চাচাতো ভাইয়েরা। হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পাঁচ ভাই ও তাদের পরিবার। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে সহোদর ভাই ও ভাইপোর দায়েরকৃত মামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। ঘটনাটি শহরের কাটিয়া টাউন বাজার এলাকার মরহুম আলহাজ গোলাম আকবর পরিবারের। গোলাম আকবরের মেজ ছেলে মহসিন আলী ও তার ছেলে আবজাল হোসেনের ‘চক্রান্তে’ অপর পাঁচ ভাই বর্তমানে দিশেহারা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করে এতথ্য জানান কাটিয়া টাউন বাজার এলাকার মৃত গোলাম আকবরের ছেলে আবুল বাসার। সংবাদ সম্মেলনে আবুল বাসারের সাথে এসময় তার ভাই আবু জাফর, মৃত আব্দুল্লাহ ও মৃত আবুল আহসানের পরিবারের সদস্য ও চাচাতো ভাইয়েরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তেব্যে আবুল বাসার আরও বলেন, তাদের পিতা মরহুম গোলাম আকবর সাতক্ষীরা শহরের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ছিলেন। তারা ছয় ভাই। তার বাবার মৃত্যুর পর তার আপন বড়ভাই মহসিন আলী ও তার ছেলে আবজাল হোসেন তাদের ভাইদের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানি করে আসছে মহসিন ও তার ছেলে আবজাল হোসেন। আমরা শহরের কাটিয়া টাউন বাজার এলাকার মরহুম গোলাম আকবরের ছেলেমেয়েরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি, আমাদের পিতা গোলাম আকবরের মৃত্যুর পর তার জমিজমা নিয়ে আমাদের ভাই ও চাচাতো ভাইদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। যা বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। এই নিয়ে আমাদের পরিবারের মধ্যে অশান্তি চলছে। আমাদের পিতা মরহুম গোলাম আকবর জীবিত থাকা অবস্থায় আমাদের কাটিয়ার সমস্ত জমিজমা ‘সরদার ইসমাইল ট্রাস্ট’ এর নামে দুটি দলিল করে যান।
ওই দলিল দুটি থাকার কারণে কাটিয়ার জমিজমা ‘সরদার ইসমাইল ট্রাস্ট’ এর নামে ডিপি/মাঠপর্চা ও খতিয়ান প্রস্তুত হয়। কিন্তু ওই ট্রাস্ট পরিচালনা কমিটি থেকে আমরা ও আমাদের ভাইয়েরা অর্থাৎ ট্রাস্ট পরিচালনা কমিটি বসে সকলের সম্মতির মাধ্যমে ট্রাস্ট দলিল দুটি বাতিলের আবেদন করে যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে। ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল আমাদের মধ্যে সেলেনামা সূত্রে ডিক্রি হয় এবং ওই ট্রাস্ট দলিল দুটি বাতিল মর্মে ঘোষণা করা হয়। এই ডিক্রি অনুযায়ী আমরা পরবর্তীতে খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস থেকে সবাই একত্রে এবং সসলের সম্মতিতে ওই জমিজায়গা আমাদের নিজেদের নামে রেকর্ড প্রস্তুত করি। যা বর্তমানে চূড়ান্ত রূপে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের মেজ ভাই মহসিন আলী বিষয়গুলি অস্বীকার করে আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ১৫টি ভিত্তিহীন মিথ্যা মামলা করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে আমরা আর্থিক এবং সামাজিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, গত ২৮ নভেম্বর আমাদের মেজ ভাই মহসিন আলী সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে গণমুখী ক্লাবের পাশে হাবিবুল্লাহ মাস্টারের বাড়ির সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়। এ ঘটনায় তার ছেলে আবজাল হোসেন তার তিন চাচার (আমাদের তিন ভাই) নামে থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ করে। পরবর্তীতে থানার পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক সুষ্ঠু তদন্তে ওই বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনা বলে প্রমাণিত হয়।
মহসিন আলী ও তার ছেলে আবজাল হোসেন কর্তৃক একের পর এক মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া ঘটনা দিয়ে মামলা করে আমাদের নাজেহাল করে চলেছে। বর্তমানে আমরা আমাদের পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। নিজেরা কোন ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ঘায়েল করার জন্য পাঁয়তারা চালাচ্ছে পিতা-পুত্র। সুষ্ঠু তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে ষড়যন্ত্র। এ ঘটনায় তারা জেলা পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।