কল্যাণ ডেস্ক
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর প্রণীত সংবিধানের মৌলিক দিক নির্দেশনার ভিত্তিতে সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার পক্ষে অন্তর্বতীকালীন সরকার। এ ক্ষেত্রে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ছাত্র-জনতাসহ জনগণের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর উপর জোর দিতে হবে। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় উপদেষ্টাসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের দুই কর্মকর্তা এমন প্রস্তাব দেন।
‘সংবিধান সংশোধন নাকি পুনর্লিখন, কোন পথে হবে গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন?’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। সিজিএসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘৭১ এর প্রত্যাশা এবং ২০২৪ এর প্রত্যাশা অভিন্ন নয়। ১৯৭১ এর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বিধায় ২০২৪ এর এই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম, তাকে সমুন্নত রাখার জন্যই দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র গঠনের প্রয়োজন। ১৯৭১ এর পর সংবিধান রচনায় যে ধরনের আলোচনা হয়েছিল, তা থেকে আমরা দিক নির্দেশনা পেতে পারি।’
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন দেশে সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, সংবিধান জীবিত ডকুমেন্ট, তাকে নিয়ে কাজ করা সম্ভব। গোঁজামিল দিয়ে সংবিধানকে সংশোধন করা হয়েছে বার বার, তা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। সকল ধরনের মতামতকে সঙ্গে নিয়েই গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের দিকে এগিয়ে যাবে দেশ। সরকার সিদ্ধান্ত দেবে না, সিদ্ধান্ত দেবে ছাত্র-জনতা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রায় একই সুরে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। সংবিধানে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ‘জনগণের মতের প্রতিফলন’ ঘটানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তরুণ এই রাষ্ট্রচিন্তক।
মাহফুজ বলেন, ১৯৭১ এর প্রেক্ষাপট থেকে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সংবিধানে নতুনত্ব আনতে হবে। ধারাবাহিকভাবে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধান পুনর্লিখনের প্রয়োজন বলা হচ্ছে, কিন্তু জনগণের মতের প্রতিফলন আদৌ হচ্ছে কি না এটাও দেখা প্রয়োজন। আদর্শিক ও রাজনৈতিক দিকগুলোর চেয়ে জনগণের সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিগত সরকার সকল প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে ধ্বংস করে গেছে যে ব্যক্তি পর্যায়েও স্বৈরাচারিতা চলে গেছে, এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উপদেষ্টা ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধান এমনভাবে পরিবর্তিত করা হয়েছে যে তাতে ব্যক্তিস্বার্থ বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ব্যক্তির হাতে, প্রধানমন্ত্রীর হাতে অবাধ ক্ষমতা থাকায় দলীয়, রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সাংবিধানিক পুনর্লিখন ব্যতীত এই ক্ষমতার এককেন্দ্রিকরণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। সাংবিধানিক পদগুলোতে কেন, কীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, তা আমাদের অজানা নয়। এমনকি রাষ্ট্রপতি নিয়োগের সিদ্ধান্ত একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর ছিল, ক্ষমতার অপব্যবহারের এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কি হতে পারে?’
ক্ষমতার এককেন্দ্রিকরণের সমাধান হিসেবে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন নাকি নতুন করে পুনর্লিখন প্রয়োজন তা বিতর্কের বিষয়। কে পুনর্লিখন করবে? কে সংশোধন করবে? এই দায়িত্ব কোন নির্দিষ্ট সরকারের নয়, এই দায়িত্ব জনগণের। সরকারের দায়িত্ব সকল স্তরের জনগণকে পথ তৈরি করে দিতে হবে সংবিধান প্রণয়নে অংশগ্রহণ করবার জন্য।’
কোনো দল ক্ষমতায় এসে যাতে সংবিধানে নিজেদের মতো পরিবর্তন না আনতে পারে তা নিশ্চিত করতে সংবিধান সংস্কারের বদলে পুনর্লিখনের প্রস্তাব দেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, নতুনভাবে সংবিধানে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে সংখ্যাগুরুর অত্যাচার বন্ধের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না বলেন, বর্তমান সংবিধান ১৯৭১ এর প্রেক্ষিতে লেখা হয়েছিল। গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। যে আইন ছিল শাসক শ্রেণীর শোষণের জন্য সেই আইন এখনো কীভাবে বিদ্যমান থাকে? আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনকে যদি কিনে ফেলা যায়, তাহলে গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? সংবিধান বাতিলের মধ্যে গেলে, দশ-বিশ বছর পরে তা আবারও বাতিল হবে।
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন, ‘সংসদের কাজ হলো সংবিধান বাস্তবায়ন করা, একই সংসদ সংবিধান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জড়িত থাকলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। একটা দেশের সংবিধান সেই দেশের রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত। সার্বভৌমত্ব জনগণের জন্য হওয়া প্রয়োজন ছিল, যার প্রতিফলন দেখা যায়নি। মৌলিক অধিকার, সমতার কথা আছে কিন্তু তা বাস্তবায়নের কথা নেই সংবিধানে। প্রত্যক্ষ প্রতিবিম্ব থাকা প্রয়োজন সংসদীয় আলোচনায়। নানা রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে পিছিয়ে পড়া মানুষদের কথা তুলে আনতে হবে। সংবিধানের সংশোধনের নামে দলীয়করণ করেছে প্রতিটি সরকার। সকল ক্ষমতা একজনের হাতে থাকলে স্বৈরাচার তৈরি হবেই। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা সসীম, জনগণের ক্ষমতা অসীম।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, বৈষম্য এখনো চলমান। সংবিধান সম্পূর্ণরূপে বাদ দিয়ে নতুন করে লেখা বেশ কঠিন। নতুন বাংলাদেশে নতুন সংবিধানে মৃত্যুদণ্ডকে বাদ দেয়া প্রয়োজন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সাথে মৌলিক অধিকারের ওপরও জোর দেয়া প্রয়োজন। সংবিধানের ব্যাখ্যা আসা প্রয়োজন প্রধান বিচারপতির পক্ষ থেকেই। সংবিধানের সংশোধনের জন্য ভিন্ন মত, ধর্মের সবার অংশগ্রহণের প্রয়োজন।
অন্যদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান, সুজনে সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, চাকমা সার্কেলের প্রধান ও আইনজীবী রাজা দেবাশীষ রায়; সাবেক বিচারক ইকতেদার আহমেদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান; ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস এন্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান; সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দিলরুবা শরমিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র হাবিবুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।
দিলারা চৌধুরী বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ণ ও সকল জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। বর্তমান সংবিধান নিয়ে কোন গণতান্ত্রিক সরকার চলতে পারে না। বাংলাদেশ যে ভয়াবহ সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা উত্তরণের জন্য সংবিধান পুনর্লিখন। সংবিধান প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করা প্রয়োজন ছিল তা হয়নি। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের আমাদের দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কোন ব্যক্তিকেই ভরসা করতে পারেন না, তাঁরা মনে করে যে এই প্রজন্মের মানুষ ক্ষমতা পেলেই লুটপাট করবে। বাংলাদেশের সমাজের যে ভঙ্গুর অবস্থা, তা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, সুশীল সমাজ যদি সংবিধান পুনর্লিখন বা সংশোধনে এগিয়ে আসে তাঁদের উচিত হবে দ্রুততম সময়ে কাজ করা।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সবার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন এই বলেন, সংবিধান পুনর্লিখনের ভিত্তিটা কি? যে আন্দোলন হয়েছে তা ছিল প্রথমত কোটা বিরোধী আন্দোলন, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন নয়। পরিবর্তন সবাই চায়, পরিবর্তন হওয়া উচিত। দারিদ্রতার জন্য গণতন্ত্রের সুবিধা ভোগ করতে পারছে বিশাল জনগোষ্ঠী। শ্রেণী বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে হবে, গণতন্ত্রের ফল আস্বাদন করতে হলে। বেআইনি কাজকর্মকে আইনি করা হয়েছে আদালতের মাধ্যমে। আইন প্রণয়ন হয়েছে সচিবালয়ে।
মুনিরা খান বলেন, ‘আমরা গণ আন্দোলনের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতা পেয়েছি। সংবিধান সংশোধনে সদিচ্ছার প্রয়োজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেয়া নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ আসবে তা যেন জনগণের মতের প্রতিফলন সংবিধানে নিয়ে আসে। সংবিধানের সংশোধন না করে একনায়কত্বকে প্রতিরোধ করা যাবে না। সংবিধান লিখনের দায়িত্ব সবাইকেই নিতে হবে।’
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে সংবিধানের পুনর্লিখন বা সংশোধনের। সংবিধানের যে এক তৃতীয়াংশ সংশোধনযোগ্য নয়, তা কিন্তু সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নয়। মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন না করেই সংবিধান সংশোধনযোগ্য করা সম্ভব। পঞ্চদশ সংশোধনী স্থগিত করে সংবিধানকে পুনরায় সংশোধন সম্ভব। তরুণ প্রজন্ম, জনগণের আকাঙ্ক্ষা, রাজনৈতিক দলের সুপারিশগুলো নিয়ে এই সরকারের কাজ করা প্রয়োজন। সংবিধানপ্রণেতা কমিটিতে সবার অংশগ্রহণ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় জানান তিনি।
রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, ‘সংবিধানে সংখ্যা যাই হোক, প্রধান বিষয় হোক মৌলিক অধিকারের। ভবিষ্যৎ সংবিধানে কি হবে? তা আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে। নতুন সংবিধানে সমতলের আদিবাসী, পাহাড়ি আদিবাসী, ধর্মীয় বিভিন্ন গোত্রের জনগোষ্ঠী সবারই অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। বিভিন্ন দেশের সংবিধান থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের পুনর্গঠন সম্ভব। বর্তমান সংবিধানে জাতিগত নিরপেক্ষতা নেই, যা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।’
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে বাধ্য বর্তমান সরকার। না হলে এই সরকারও ১ / ১১ এর সরকার হয়ে যাবে। সংবিধান সংশোধনে দুটি উপায় অবলম্বন করা যায়। এক. জাতীয় সংবিধান প্রণেতা কমিটি গঠন, দুই. জাতীয় অধিবেশনের মাধ্যমে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। মূল সমস্যাকে চিহ্নিত করে আগাতে হবে। স্বৈরাচারী সরকার থেকে বিচারিকতন্ত্রে যেন আমরা না চলে যাই।’
হাবিবুর রহমানের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে ইকতেদার আহমেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। বিচারকদের সীমাবদ্ধতা থাকায়, শপথ দ্বারা বাধিত হওয়ায় সংবিধান প্রণয়নে ব্যাখ্যা দেয়া ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের কোনো ভূমিকা থাকে না। গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সর্বদাই প্রশ্নের সম্মুখীন। সারা বিশ্বের বিচার বিভাগ নাগরিকদের অধিকার আদায়ের প্রতিষ্ঠান, আর বাংলাদেশের বিচার বিভাগ অধিকার হরণের প্রতিষ্ঠান।
বোরহান উদ্দিন খান বলেন, ইতিহাস বিকৃত করে সংবিধানকে হাতিয়ার বানানো হয়েছে। সংবিধানের এক তৃতীয়াংশ যেহেতু সংশোধনের কোন উপায় নেই, তাই সংবিধান পুনর্লিখন প্রশ্নের বিষয়। আদালত সংবিধান সংশোধন করতে পারে না, ব্যাখ্যা দিতে পারে। আইনজীবীরা কেউ চ্যালেঞ্জ না করায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে সংবিধান বারংবার সংশোধিত হয়ে এসেছে। সংসদের কাজ হবে সংবিধানের সংশোধনের। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করলে পরবর্তীতে অন্য সংশোধনীগুলোও আদালত বাতিল করে দেবে। আদালতের হাতে সকল ক্ষমতা দেয়া যাবে না।
মনজুর হাসান বলেন, ১৯৭২ এর সংবিধান অনেক বেশি প্রগতিশীল ছিল। এমনভাবে সংবিধানকে পরিবর্তন করা হয়েছে যে, এখন আর এটি জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন করে না, একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর ইচ্ছার প্রতিফলন দেখতে পাই। সংবিধান পুনর্লিখন করা প্রয়োজন তবে একদম শূন্য অবস্থান থেকে নয়। রাজনীতি, সুশাসন, আইনের শাসন আনতে হলে ভবিষ্যতে সংবিধান পুনর্লিখন প্রয়োজন।
অ্যাডভোকেট দিলরুবা শরমিন বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতাসীন দলগুলোর কাছে সংবিধান কুক্ষিগত ছিল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ক্ষমতাগুলো পেয়েছেন তা সাংবিধানিকভাবেই প্রতিষ্ঠিত। কোন কিছু করতে গেলেই সংবিধানবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী কাজ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। সাংবিধানিক জুজুর ভয় নাগরিকদের কাটিয়ে ওঠা প্রয়োজন।
জিল্লুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে সিজিএস গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য ধারাবাহিক সংলাপ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব সংলাপে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ নয়, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের বক্তব্য তুলে আনার প্রচেষ্টা থাকবে। প্রতিটি সংলাপের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হবে। শুধু সংস্কার নয় গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের মাধ্যমে দেশ গঠন করতে হবে।
