নিজস্ব প্রতেবেদক
গাড়ি দুর্ঘটনায় চালকের জামিন না পাওয়ার আইন সংশোধনসহ ৮ দফা দাবি দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। দাবি না মানা হলে আগামী মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ভোর ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) যশোরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের প্রতিনিধি সভায় এই ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব সাইফুল আলম।
এ সময় তিনি বলেন, যোগাযোগ উপদেষ্টার কাছে আমরা আট দফা দাবি জানিয়েছি। সারাদেশেই দাবির পক্ষে প্রচার চলছে। আমাদের দাবি মেনে না নিলে ১২ আগস্ট ভোর ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, একজন চালকের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তার জামিন মিলবে না, পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমরা বলছি দুর্ঘটনার কারণে মামলা হতে পারে, কোর্ট সাজা দিতে পারে। কিন্তু জামিন পাওয়া যাবে কি না, তা নির্ধারণ করা আদালতের বিষয়। এটি নাগরিক অধিকার। আইনে জামিন নিষিদ্ধ করে রাখা উচিত নয়। এই ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে।
দাবিগুলো হলো
১. সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারা সংশোধন করা;
২. পুরোনো বাণিজ্যিক যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল (ইকোনমিক লাইফ) ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা;
৩. সেটি না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ রাখা;
৪. বাজেটে বাণিজ্যিক যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর কমিয়ে আগের মতো বহাল রাখা;
৫. মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন আমদানির সময়সীমা থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করা;
৬. দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান কার্যকর করা।
অন্যান্য দাবিগুলো হলো: মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন করা; মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও অনুমোদনহীন হালকা যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করা; ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন দ্রুত দেওয়া এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা বাস্তবায়ন করা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ যশোরের সভাপতি আনিসুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ লতিফ, বরিশাল জেলা প্রতিনিধি ইউসুফ হাওলাদার, যশোর জেলা শ্রমিক ইউনিয়নে সাধারণ মোর্ত্তজা হোসেন প্রমুখ।