নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের কেশবপুরের ভরতভায়নার সাউথ বেঙ্গল কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ২৪ জন। এ কলেজ থেকে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় তিন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি। বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এতথ্য জানিয়েছেন যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) সমীর কুমার কুন্ড।
এমন ফলাফলের কারণ জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মাহাবুবর রহমান দিপু মুঠোফোনে বলেন, তিনজন পরীক্ষার্থীর দুইজন ছাত্রী ও একজন ছাত্র। ছাত্রী দুইজনই বিবাহিত। তিনজনের কেউ কলেজে আসতো না। টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাদের এইচএসসি পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।
সূত্র মতে, ২০০৩ সালে কেশবপুরের গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ভরতভায়নায় স্থাপিত হয় সাউথ বেঙ্গল কলেজ। কিন্তু ২০ বছরেও কলেজটি এমপিও হয়নি। সেখানে ২৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ১৯ জনই শিক্ষক। আর পাঁচ জন কর্মচারী। কলেজটি এমপিও না হওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা নিয়মিত কলেজে আসেন না।
শিক্ষকদের ভাষ্য, প্রথম দিকে কলেজটি ভালভাবে চলছিল। কিন্তু এমপিও না হওয়ায় শিক্ষকরা মানবেতন জীবনযাপন করতে থাকেন। অনেকে কলেজে অনিয়মিত হয়ে যান। অধ্যক্ষ মাহাবুবর রহমান দিপু জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এমপিও সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু কলেজটি এমপি হয়নি। অনেকে শিক্ষকের অবসর নেওয়ার সময় এগিয়ে এসেছে। কিন্তু তারা এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। তাদের মাঝে চরম হতাশা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনার পর থেকে অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। এবার যারা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তারা করোনার মধ্যে ভর্তি হয়। আমরা ভর্তি করতে চাইছিলাম না। কিন্তু অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দাবির কারণে ভর্তি করা হয়। তারা এইচএসসিতে কেউ পাস করেনি।
যশোর বোর্ড মতে, এবার ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি। শূন্য পাসের ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঝিনাইদহের শৈলকূপার রাহাতুন্নেছা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ছয়জন, কুষ্টিয়ার মীরপুরের হাজী নুরুল ইসলাম কলেজ থেকে পাঁচজন, যশোরের কেশবপুরের সাউথবেঙ্গল কলেজ থেকে তিনজন, মাগুরা সদরের রাউতাড়া এইচএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও নড়াইলের গোবরা মহিলা কলেজ থেকে দু’জন করে এবং মাগুরার শিবরামপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে একজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) সমীর কুমার কুন্ডু বলেন, ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করতে পারেনি। এগুলো সবই ননএমপিও। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থা একেবারেই রুগ্ন। ফলাফলের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানকে সর্তক ও শোকজ নোটিশ পাঠানো হবে। একই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: যশোর বোর্ডে শতভাগ পাসের তালিকায় ৩৯ আর শূন্য পাসের হারের তালিকায় ৬টি কলেজ