সুনীল ঘোষ: বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল (২৪ নভেম্বর) যশোরের সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। সমাবেশস্থল যশোর স্টেডিয়ামে ইতোমধ্যে নৌকার আদলে সভামঞ্চ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। সুপেয় পানি, মগ ও টয়লেট-বাথরুম স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে মঙ্গলবার মাঠে নামিয়েছে র্যাবের প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জনসভা সফলভাবে বাস্তবায়নে মঞ্চ সাজসজ্জা উপ-পর্ষদের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ জানান, সভামঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। নৌকার আদলে নির্মিত মঞ্চের দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট ও প্রস্থ ৪০ ফুট। মূল স্টেজ করা হয়েছে ৮০ ফুট বাই ৪০ ফুট। মঞ্চের পেছনে ৭৬ ফুট বাই ১০ ফুট ব্যানার টাঙানো হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-পর্ষদ’র আহ্বায়ক সুখেন মজুমদার জানান, প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশকে সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর করে তুলতে ৪শ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির সদস্যরা সমাবেশের প্রবেশমুখ, সমাবেশ স্থল ও সমাবেশে আগতদের সহযোগিতা করবেন।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ’র নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগসহ সহযোগী সংগঠনের ৫ শতাধিক নেতাকর্মী শহরে প্রচার মিছিল বের করেন। বকুলতলা বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল থেকে মিছিলটি বের হয়ে মনিহার চত্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক সুখেন মজুমদার, কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মঈন-উদ্দিন মিঠু, জেলা মহিলা লীগের সভাপতি লাইজু জামান ও যুব মহিলা লীগের সভাপতি মঞ্জুন্নাহার নাজনীন সোনালী প্রমুখ।
এরআগে দুপুর ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক কাজী বর্ণ উত্তমের বাসভবন থেকে একটি সাইকেল র্যালি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে একই স্থানে এসে র্যালি শেষ হয়। কাজী বর্ণ উত্তম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ ঘিরে সাধারণ মানুষের মনে নতুন আশা জেগেছে।
মহাসমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন দৈনিক কল্যাণকে বলেন, জাতির জনকের সুযোগ্য উত্তরসুরী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে মুখিয়ে আছেন যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। সভা-সমাবেশ ও প্রচার মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে গঠিত ৮ উপ-পর্ষদের নেতৃবৃন্দ। ৫ থেকে ৬ লাখ মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি ছিল।
তারজন্য বৃহত্তর যশোর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা হয়েছে উল্লেখ করে শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, শেষ মুহূর্তে ধারণা করছি, লোকসমাগম ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। জনসমুদ্র হবে যশোর। বাড়তি লোকসমাগমের কারণে বাড়তি প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে। সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রধানন্ত্রীর সমাবেশ সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে জেলা আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, যশোরে প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশ প্রমাণ করে দেবে আওয়ামী লীগ নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর রয়েছে।
অপরদিকে, যশোর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ পারভেজ জানান, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে স্টেডিয়াম ও আব্দুর রাজ্জাক কলেজ মাঠে ৮০টি টয়লেট-বাথরুম স্থাপন করা হয়েছে। সুপেয় পানির জন্য বসানো হয়েছে ৪টি সাবমার্সিবল ও ৪টি টিউবওয়েল। ২০টি ট্যাঙ্কি থেকে পানি যাবে ২৬০টি ট্যাপকলে। পানি খেতে সরবরাহ করা হয়েছে ২৬০ পিস মগ (গ্লাস)।
গ্যালারির চারপাশে জনসচেতনামূলক লেখা সম্বলিত ৮০ পিচ প্যানা টানানো হয়েছে। এসব মাঠের সৌন্দর্য বর্ধনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর বিমানবন্দর থেকে শুরু করে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের দেয়াল নানা রঙে রাঙানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিভিন্ন দেয়ালে প্রধানমন্ত্রীর বাণী ও দলের বিভিন্ন স্লোগান লেখার কাজ করতে দেখা গেছে।
যশোর ট্রাফিক বিভাগ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গাড়ি পার্কিয়ের নির্ধারিত স্থানগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। কোন স্পটে কোন ধরণের গাড়ি পার্কিং করা যাবে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে ভাষণ দিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আগামীকাল ২৪ নভেম্বর সেই মাঠে ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।