নিজস্ব প্রতিবেদক
বেনাপোলের ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক সুজায়েতুজ্জামান প্রিন্সকে হত্যার ২১ বছর পর ভগ্নিপতি উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন যশোরের আদালত। বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জয়ন্তী রানী দাস এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান মিজান শার্শা উপজেলার আমতলা গাতীপাড়া গ্রামের আক্কাস আলী মোড়লের ছেলে এবং নিহত প্রিন্সের আপন দুলাভাই। অন্য আসামিরা হলেন, বেনাপোল কাগজপুকুর গ্রামের কালু ওরফে ঘাড়কাটা কালুর ছেলে সেকেন্দার আলী, একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জসিম উদ্দিন এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটাডাঙ্গা গ্রামের গোলাম ম-লের ছেলে ইকবাল হোসেন।
রায়ের সময় আসামি মিজান ও সেকেন্দার আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিচারক তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
পলাতক অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার অতিরিক্ত পিপি আব্দুর রাজ্জাক।
মামলা বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২০ আগস্ট প্রিন্স মোটরসাইকেল নিয়ে নিজ বাড়ি পোড়াবাড়ি নারায়ণপুর গ্রাম থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরদিন সকালে ছোট নিজামপুর গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার পর প্রিন্সের মামা বকতিয়ার রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। তিনি মামলার এজাহারে সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, প্রিন্সের মোটরসাইকেলের প্রতি তার দুলাভাই মিজানের আগ্রহ ছিল। মামলাটি তদন্তের পর বেরিয়ে আসে পরিকল্পিতভাবে মোটরসাইকেল ছিনতাই করতেই প্রিন্সকে হত্যা করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আফজাল হোসেন ওই চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ২১ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত এই মামলার রায়ে চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দেন বিচারক। একই সাথে রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদ-, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়েছে।