নিজস্ব প্রতিদেক
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারকে না দিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানকে ‘বিশেষ সুবিধা’ নিয়ে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ঠিকাদার। দ্বিতীয় দরদাতাকে কাজ দেয়ায় সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে অন্তত ১২ লাখ টাকা। গত ৪ ডিসেম্বর ৬টি গ্রুপের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। তবে সবকিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের জন্য ৯টি গ্রুপের দরপত্র আহ্বান করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার। এরমধ্যে ৬টি গ্রুপের কাজে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আর পছন্দের ঠিকাদার না পাওয়ায় অবশিষ্ট তিনটি গ্রুপের কাজের জন্য পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী, এসএম শফি, এমকে আল মামুন, হাফিজুর রহমান ও শিকাদার ট্রেডার্স নামে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান যশোর কারাগারের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের দরপত্রে অংশ নেয়। এরমধ্যে ‘সি’ এবং ‘ডি’ গ্রুপে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহের জন্য ৪১ লাখ টাকায় এসএম শফিকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী ৩৭ লাখ টাকা সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও তাকে কাজ দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দেয়ায় এখানে সরকারের বাড়তি খরচ হবে ৪ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ‘বি’ এবং ‘জি’ গ্রুপে এমকে আল মামুনকে ৩২ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এ কাজে ২৯ লাখ টাকার সর্বনিম্ন দরদাতা ছিলো মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী। এখানেও বাড়তি খরচ হবে ৩ লাখ টাকা।
এছাড়া ‘এ’ এবং ‘আই’ গ্রুপে ৪৫ লাখ টাকায় কাজ বাগিয়ে নিয়েছে শিকদার ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ৪০ লাখ টাকা সর্বনিম্ন দর দিয়েছিল মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী। সর্বনিম্ন দরদাতাকে উপক্ষো করায় ৫ লাখ টাকা বেশি গুণতে হবে সরকারের। এভাবে ছয়টি গ্রুপের কাজে সরকারের ১২ লাখ টাকা গচ্চা যাবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী তোফাজ্জেল হোসেনের দাবি- ২০০৬ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় তার প্রতিষ্ঠান কারাগারে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করেছে। অতীতে যারা সিনিয়র জেল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তারাও কারাগারের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার হিসেবে তাকে মালামাল সরবরাহের প্রত্যয়ন দিয়েছেন। কিন্তু ‘খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ’ ঠিকাদার কথাটি উল্লেখ না থাকার ঠুনকো অযুহাতে সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও তাকে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি। এতে সরকারের অন্তত ১২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হবে। কাজ না পাওয়ায় তিনি আইনি লড়াইয়ে যাবেন বলে জানান।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলর শরিফুল আলম জানিয়েছেন, মেসার্স সাগর বেকারি এন্ড কনফেকশনারী সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (পিপিআর) অনুযায়ী সর্ব শর্ত পূরণ করেনি। এজন্য তাকে কার্যাদেশ দেয়া যায়নি। না পাওয়ার কারণও ঠিকাদারকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, সবকিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে। কোন অনিয়ম হয়নি।