নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী ২৭ মে যশোরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে গণগ্রেফতার চালাচ্ছে ও নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এমন অভিযোগ করে যশোর জেলা বিএনপি শনিবার দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের অবগত করেন।
তিনি দাবি করেন, সরকারের দমননীতির অংশ হিসেবে গত ১৭ মে রাত থেকে এ পর্যন্ত (শনিবার দুপুর) যশোরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১২০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব নেতাকর্মীকে পুলিশ পেন্ডিং মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করছে। যদিও পুলিশের দাবি, কোন গণগ্রেফতার না। যাদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক মামলা রয়েছে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গায়েবি মামলায় গ্রেফতার, নির্যাতনের প্রতিবাদসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আগামী ২৭ মে অনুষ্ঠিতব্য এই সমাবেশের জন্য যশোর টাউন হল ময়দান বা কেন্দ্রীয় ঈদগাহে প্রশাসনের কাছে অনুমতির জন্য আবেদন দেওয়া হয়েছে। সমাবেশের আর ৬ দিন সময় থাকলেও এখনোও অনুমতি দেয়নি। এই সমাবেশ সফল করতে জেলা বিএনপি বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলাতে প্রস্তুতি সভা করছে। কিন্তু বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ বানচাল করতে পুলিশ পরিকল্পিতভাবে গ্রেফতার চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা চলছে। গত ১৭ মে রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত যশোরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১২০ জন আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান মিঠু, নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাছুম, যশোর জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালামও রয়েছেন। বাকীরা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী। গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু আরো বলেন, বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি এই সমাবেশ বানচাল করতে সরকার পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে গণগ্রেফতারে নেমেছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও দলীয় কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার এমন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকা- ঘটাচ্ছে। সরকারের এই আচরণে আমরা হতবাক। রাজনৈতিক দলকে মোকাবেলা রাজনৈতিকভাবে না করে আওয়ামী লীগ পুলিশি রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশের এমন গণগ্রেফতারে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। এমনকি নেতাকর্মীরা এতোটাই ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে যে সংবাদ সম্মেলনে আসতেও সাহস পায়নি। তারপরও সরকারের এই অপকৌশল ব্যর্থ হবে। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে হাজার হাজার নেতাকর্মী সকল কর্মসূচি সফল করবে। এসময় তিনি পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি এই গণগ্রেফতার বন্ধ এবং সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান।
উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চেীধুরী মুল্লুক চাঁদ প্রমুখ।
এই বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, কাউকে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ভাংচুর ও অন্যান্য মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। কোন সমাবেশকে টার্গেট করে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে।