নিজস্ব প্রতিবেদক
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি অচল মাল। এ দেশে আর তাদের ফিরে আসার সুযোগ নেই। একইসাথে দেশে বিগত ৫০ বছর ধরে কালো টাকার রাজনীতি চলছে। এই ধারা বন্ধ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নির্বাচনী খেলা বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে যশোর জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১৮-এর কোটা সংস্কার থেকে শুরু করে ২৪-এর রাষ্ট্র সংস্কার এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের আকাক্সক্ষায় শহরের মুন্সি মেহেরুল্লাহ ময়দানে এই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নুর বলেন, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে না কমার পেছনে পূর্ববর্তী সরকারের মতোই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন এবং ক্ষমতার লোভই দায়ী।
তিনি বলেন, যারা এখনো ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছেন, তাদের উচিত পতিত স্বৈরাচারদের দিকে তাকানো। দীর্ঘদিন ধরে লুটপাটকারীরা রাজনীতিকে জমিদারী প্রথা বানিয়ে রেখেছিল, কিন্তু এই দেশে আর লুটপাটের রাজনীতি চলবে না।
তিনি আরও বলেন, পুরাতন ব্যবস্থা দিয়ে নতুন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব নয়, তাই নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রীয় সংস্কার জরুরি। রাষ্ট্র পুনর্গঠন না করে কোনো নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমরা সবাই এক। আর কেউ সাপের মতো ফনা তোলার চেষ্টা করলে দেশের সাধারণ মানুষ সেই ফনা ভেঙে দেবে।
নুর অভিযোগ করে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা একা দেশ শাসন করেছেন, কিন্তু শেষ বেলায় দুপুরের ভাতও খেতে পারেননি। তিনি বলেন, দিল্লির মাল দিল্লি চলে গেছে, যারা এখনো আস্ফালন দেখাচ্ছেন, দেশের সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিহত করবে। তিনি আওয়ামী লীগকে একটি ‘গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই দল আর গ্রহণযোগ্য নয়।
সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগ একতরফা ইতিহাস তৈরি করেছিল এবং এখনকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও একই কাজ করছে। তিনি বলেন, একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হয়েছে। জনগণের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার এবং একটি বৈধ নির্বাচন, তবে নির্বাচন সংস্কার না হলে আবারও ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদ’ ফিরে আসবে।
রাশেদ আরও বলেন, শেখ হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে গিয়েও স্বৈরতন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের যারা অন্যায় জুলুম করে নাই, তাদের বিরুদ্ধে আমরা না। কিন্তু যারা আমার ভাইদের হত্যা করেছে তাদের কোন ছাড় হবে, কোন আপোষ নেই। তাই একতার কোন বিকল্প নেই।
সমাবেশে জেলা কমিটির সভাপতি বিএম আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন এবং খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল। সমাবেশটি পরিচালনা করেন যশোর জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক রাশিদুর রহমান নিউটন।