এম সাইফুল ইসলাম, খুলনা ব্যুরো
দীর্ঘ দুই দশক পরে আগামী ২৪ জানুয়ারি হতে যাচ্ছে খুলনা জেলা আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলন। এ নিয়ে উচ্ছসিত তৃণমূলের নেতাকর্মি ও প্রার্থীরা।
জেলায় সভাপতি পদে ছয় জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। ফলে নতুনভাবে সম্মেলন ঘোষণার পর সংগঠনের নেতাকর্মীরা নড়ে চড়ে বসেছেন। অপরদিকে ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও আক্তারুজ্জামান বাবুকে সাধারণ
সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর প্রায় ৫/৬ মাস পর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হয়।
দীর্ঘদিন সম্মেলন বা কাউন্সিল না হওয়ায় জেলা যুবলীগের বর্তমান সাংগঠনিক কর্মকান্ড অনেকটা স্থবির। ৯টি উপজেলা ও ৬৮ ইউনিয়নে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে কামরুজ্জামান জামাল ও আক্তারুজ্জামান বাবু জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ লাভ করেন। এর মধ্যে কামরুজ্জামান জামাল বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও আখতারুজ্জামান বাবু খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য।
এরপর মূলত কয়েকদিন অভিভাবক শূণ্য সংগঠনটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী হিসেবে দুইজন করে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে কামরুজ্জামান জামালের অনুসারী জেলা যুবলীগের ২ নম্বর সহ-সভাপতি অধ্যাপক জুলফিকার আলী জুলু, বর্তমানে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ২নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
সরদার জাকির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
অপরদিকে আক্তারুজ্জামান বাবুর অনুসারী ৭নম্বর সহ-সভাপতি আজিজুল হক কাজল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ১নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাস্টার সেলিম মাসুদ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই দুই ধারার নেতৃত্বও টেকেনি। ফলে নেতাদের ব্যক্তি কেন্দ্রিক সংগঠনে পরিণত হয় খুলনা জেলা যুবলীগ। জেলা যুবলীগের সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মাহফুজুর রহমান সোহাগ বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির চিঠি পেয়েছি। নির্ধারিত দিনে সম্মেলনের অনুষ্ঠানের জন্য কাজ শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আসাদ হল দখল নেয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মহড়া
জেলায় সভাপতি পদে ছয় জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। সভাপতি পদ প্রত্যাশীরা হলেন খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ, যুবনেতা অজিত বিশ্বাস, সরদার জাকির হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু ও জসিম উদ্দিন বাবু।
সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন, যুবনেতা মাহফুজুর রহমান সোহাগ, এবিএম কামরুজ্জামান, যুবনেতা জলিল তালুকদার, সাবেক ছাত্রনেতা দেব দুলাল বাড়ই বাপ্পী, তসলিম হুসাইন তাজ, মুশফিকুর রহমান সাগর, আবু সাঈদ খান, কামরুজ্জামান মোল্লা, হারুন আর রশিদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ছাত্রলীগ জেলা সভাপতি পারভেজ হাওলাদার।
জেলা যুবলীগের বর্তমান নেতা সভাপতি পদ প্রত্যাশী জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ বলেন, দায়িত্ব পেলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।
যুবলীগ নেতা ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মাহফুজুর রহমান সোহাগ বলেন, কারা সংগঠনের জন্য কাজ করছেন, কর্মীরা ভাল জানেন। যুবনেতা জলিল তালুকদার বলেন, যুবলীগের বর্তমান প্রচার সম্পাদক আমি। দলের দুর্দিনে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলে একটি সংঘটিত সংগঠিত যুব সংগঠন উপহার দেবো।
জেলায় নেতৃত্ব প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ হাওলাদার বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দলের জন্য কাজ করছি। যেকোন সময় সম্মেলন দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হবে। এরপরে যুবলীগে কাজ করবো এটাই তো স্বাভাবিক। বিগত দিনের মতো, আগামীতেও কাজ করে যেতে চাই।